পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
ধুস্তুরী মায়া

হোটেলে এসে আরশিতে মুখ দেখে উদ্ধব বললেন, এঃ, বয়স কমেছে বটে, কিন্তু চেহারাটা গ‍ুণ্ডা গ‍ুণ্ডা দেখাচ্ছে। তোমার তো দিব্বি রূপ হয়েছে জগ‍ু একবারে কার্তিক। দেখো ভাই, আমার শিকার তুমি যেন কেড়ে নিও না।

 জগবন্ধু বললেন, আমি শিকার করতে চাই না।

 —বেশ বেশ, তুমি শ‍ুকদেব গোসাঁই হয়ে তপস্যা ক’রো। এখন আমার মতলবটা শোন। প্রেমের মৃগয়া তো করবই, কিন্তু তাতে দিন কাটবে না। রসা রোডে একটা নতুন রঙের দোকান খুলব, পাল অ্যাণ্ড গাঙ্গুলী। তুমি বিনা মূলধনে অংশীদার হবে, লাভের বখরা পাবে। ব্যাঙ্কে দশ লাখ টাকা নতুন অ্যাকাউণ্টে জমা আছে। দেখবে ছ মাসের মধ্যে নতুন কারবারটি ফাঁপিয়ে তুলব। মনে থাকে যেন—তুমি হচ্ছ জলধর গাঙ্গুলী, আমি উমেশ পাল। রাত অনেক হয়েছে, এখন খাওয়া দাওয়া করে শ‍ুয়ে পড়া থাক।

 পরদিন সকালে চা খেতে খেতে জগবন্ধু বললেন, এখন কি করতে চাও বল।

 উদ্ধব বললেন, সমস্ত রাত ভেবেছি, ঘুমাতে পারি নি। শুনেছি বালিগঞ্জ আর নতুন দিল্লিই হচ্ছে প্রেমের জায়গা। দিল্লি তো বহু দূর, আমি বলি কি, বালিগঞ্জেই আস্তানা করা যাক।

 —ওখানে তুমি সুবিধে করতে পারবে না। তোমার বয়স কমেছে বটে, পুরো তরুণ না হলেও হাফ তরুণ হয়েছ, কিন্তু তোমার চালচলন সাবেক কালের, ফ্যাশন জান না, লেখাপড়াও তেমন শেখ নি। কিছু মনে করো না ভাই, তোমার পালিশের অভাব আছে। ওদিককার মেয়েরা ইংরিজী ফ্রেঞ্চ বলে, বিলিতী কবিতা আওড়ায়। আবার শুনেছি পেণ্টুলুন পরে, ভুর‍ু কামায়, রং মাখে, বল নাচে, সিগারেট খায়, মোটর হাঁকায়। আই সি এস, আই এ এস, বিলাত