পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
ধুস্তুরী মায়া

 —চমৎকার। দেখলেই মোহিত হয়ে যাবেন।

 টেলিফোনের আলাপ শেষ হলে জগবন্ধু বললেন, হাঁ হে উদ্ধব, ভুলে তিনটের জায়গায় চার-পাঁচটা ছোলা খেয়ে ফেল নি তো? ফাজিল ছোকরার মতন কথা বলছিলে।

 —তিনটেই খেয়েছিলাম। কি জান, ছেলেবেলায় বাবার শাসনে কোনও রকম আড্ডা দেওয়া বা বকামি করবার সুবিধে ছিল না। এখন আবার কাঁচা বয়সে এসে ফুর্তি চাগিয়ে উঠেছে। তুমি কিছু ভেবো না, আমার বুদ্ধি ঠিক আছে, বেচাল হবে না।


গবন্ধু কিছুতেই সঙ্গে যেতে রাজী হলেন না, অগত্যা উদ্ধব একলাই রাজকুমারী স্পন্দচ্ছন্দা চৌধুরানীর কাছে গেলেন। বাড়িটা জীর্ণ, অনেক কাল মেরামত হয় নি, সামনের বাগানেও জঙ্গল হয়েছে। বৃদ্ধ নায়েব রামশশী সরকার উদ্ধবকে একটি বড় ঘরে নিয়ে গিয়ে বসালেন। একটু পরে পাশের পর্দা ঠেলে স্পন্দচ্ছন্দা এলেন।

 উদ্ভব স্থির করে এসেছেন যে হ্যাংলামি দেখাবেন না। রসিকতা করবেন বটে, কিন্তু মর‍ুব্বীর চালে। হলেনই বা রাজকুমারী, উদ্ধব নিজেও তো কেও-কেটা নন।

 ঘরের ল্যাম্প শেড দিয়ে ঢাকা সেজন্য আলো কম। উদ্ধব দেখলেন, স্পন্দচ্ছন্দা লম্বা, দোহারা, কিন্তু মাংসের চেয়ে হাড় বেশী। মেমের চাইতেও ফরসা, গোলাপী গাল, লাল ঠোঁট, লাল নখ, চাঁচা ভুরু, কাঁধ পর্যন্ত ঝোলা কোঁকড়ানো চুল, নীল শাড়ি। জগবন্ধুর শিক্ষা অনুসারে উদ্ভব দাঁড়িয়ে উঠে বললেন, নমস্কার।

 —নমস্কার। আপনি বসুন।