পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বুড়োর রূপকথা
১৭

 —ইয়ে, দেখুন শ্রীযূক্তেশ্বরী রাজকুমারী পণ্ডচণ্ডা দেবী—

 —স্পন্দচ্ছন্দা।

 — হাঁ হাঁ, স্পন্দচ্ছন্দা। দেখুন, একটি কথা গোড়াতেই নিবেদন করি। আপনার নামটা উচ্চারণ করা বড় শক্ত, আমি হেন জোয়ান মরদ হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। যদি আপনাকে পদীরানী বলি তো কেমন হয়?

 —স্বচ্ছন্দে বলতে পারেন। আমিও আপনাকে উম্‌শে বলব।

 —সেটা কি ভাল দেখাবে? প্রজাপতির নির্বন্ধে আমি তো আপনার স্বামী হতে পারি। হবু স্বামীকে নাম ধরে ডাকা আমাদের হিন্দু, ঘরের দস্ত‍ুর নয়।

 স্পন্দচ্ছন্দা হি হি করে হেসে বললেন, আপনি দেখছি অজ পাড়াগেঁয়ে।

 —আমি আসল শহ‍ুরে, চার পুরুষ কলকাতায় বাস। আপনিই তো পাড়াগাঁ থেকে এসেছেন। বেশ, নাম ধরেই ডাকবেন, তাতে আমার ক্ষতিটা কি। এখন কাজের কথা শ‍ুর‍ু হক। আমার চেহারাটা কেমন দেখছেন?

 —মন্দ কি। একটু বেঁটে আর কালো, তা সেটুকু ক্রমে সয়ে যাবে। আমাকে কেমন দেখছেন?

 —খাসা, যেন পটের বিবিটি। অত ফরসা কি করে হলেন?

 —আমার গায়ের রংই এই রকম।

 উদ্ধব সশব্দে হেসে বললেন, ওগো চণ্ডপণ্ডা পদীরানী, রঙের ব্যাপারে আমাকে ঠকাতে পারবে না, ওই হল আমার ব্যাবসা। তুমি এক কোট অস্তরের ওপর তিন পোঁচ পেণ্ট চড়িয়েছ—হবক‍্স জিঙ্ক, একটু পিউড়ি, আর একটু মেটে সিঁন্দুরে। তা লাগিয়েছ বেশ করেছ, কিন্তু জমির আদত রংটি কেমন?