পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
ধুস্তুরী মায়া

 —আপনি অতি অসভ্য।

 —আচ্ছা, আচ্ছা, তোমার গায়ের রং তোমারই থাক, আমার তা জানবার দরকার কি। তবে একটা কথা বলি—মূর্তিটা কুমোরটুলি ঢঙের করতে পার নি। যদি আরও বেশী পিউড়ী কি এলামাটি দিতে আর চোখের কাজলটা কান পর্যন্ত টেনে দিতে তবেই খোলতাই হত।

 —আপনি নিজে কি মাখেন? আলকাতরা?

 উদ্ধব সহাস্যে বললেন, সরষের তেল ছাড়া কিছুই মাখি না। আমার হচ্ছে খোদ রং, নারকেল ছোবড়া দিয়ে ঘষলেও উঠবে না, একেবারে পাকা। আমার কাছে তঞ্চকতা পাবে না। বয়সও ভাঁড়াতে চাই না, ঠিক পঁয়ত্রিশ। তোমার কত?

 বাইশ।

 —উঁহু বেয়াল্লিশ।

 স্পন্দচ্ছন্দা চেচিয়ে বললেন, বাইশ!

 আরও চেঁচিয়ে টেবিলে কিল মেরে উদ্ভব বলেন, বেয়াল্লিশ!

 — আপনি আমার অপমান করছেন?

 —আরে না না, একটু দরদস্তুর করছি। আচ্ছা, তোমার কথা থাকুক, আমার কথাও থাকুক, একটা মাঝামাঝি রফা করা যাক। তোমার বয়স বত্রিশ।

 স্পন্দচ্ছন্দা মুখ ভার করে বলেন, বেশ, তাই না হয় হল।

 —লেখাপড়া কদ্দূর? মাছ-তরকারি ধোবার হিসেব এসব লিখতে পারবে?

 নাকটি ওপর দিকে তুলে স্পন্দচ্ছন্দা বললেন, মেমের কাছে এম এ ক্লাসের চাইতে বেশী পড়েছি। মশায়ের বিদ্যে কতদূর?

 —ফোর্থ কেলাস পর্যন্ত। তবে রবিঠাকুর জানি—ওরে দুরাচার হিন্দু কুলাঙ্গার, এই কি তোদের—