পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বুড়োর রূপকথা
২৩

 জগবন্ধু বললেন, আমারও মুখে দুপোটি নকল দাঁত এসে গেছে। সব তো হল, এখন বাড়ি গিয়ে বলবে কি? দু হপ্তা আমরা গায়েব হয়ে আছি, তার একটা ভাল রকম কৈফিয়ত দেওয়া চাই।

 —সে তুমি ভেবো না। তুমি তা পারবেও না, চিরকাল মাস্টারি করে ছেলেদের শিখিয়েছ—সদা সত্য কথা কহিবে। যা বলবার আমিই বলব। আজ রাতে আর বাড়ি গিয়ে কাজ নেই, হোটেলে ফিরে চল।

 হোটেলে এসে দেখলেন, তাঁদের ঘরে চার জন বিছানা পেতে শ‍ুয়ে আছে। উদ্ধব ম্যানেজারকে বললেন, আচ্ছা লোক তো আপনি, কিছু না জানিয়ে আমাদের রিজার্ভ করা ঘরে অন্য লোক ঢুকিয়েছেন! এর মানে কি?

 ম্যানেজার আশ্চর্য হয়ে বললেন, কে আপনারা?

 —ন্যাকা, চিনতে পারছেন না! উমেশ পাল আর জলধর গাঙ্গুলী। উনিশে বোশেখ, মানে দোসরা মে বুধবার থেকে দু হপ্তা এই ঘর আমাদের দখলে আছে।

 —দু হপ্তা বলছেন কি মশাই, নেশা করেছেন নাকি? আজই তো বুধবার দোসরা মে উনিশে বোশেখ।

 উদ্ভবকে টেনে নিয়ে রাস্তায় এসে জগবন্ধু বললেন, সবই ধুস্তুরী মায়া। গত দু হপ্তা জগতের ইতিহাস থেকে একবারে লোপ পেয়ে গেছে। এখন বাড়ি চল।


রাত প্রায় বারোটার সময় জগবন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে উদ্ধব নিজের বাড়িতে পৌঁছালেন। উদ্ভব-গৃহিণী কালিদাসী বললেন, বলি দুপুর রাত পর্যন্ত দুই ইয়ারে ছিলে কোন্ চুলোয়? ওঁর লক্ষী না হয় ছেড়ে গেছে, তোমার তো ঘরে একটা