পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রামধনের বৈরাগ্য
২৯

করতে পারেন নি। চার, বাঁড়ুজ্যে তাঁর ‘পঙ্কতিলক’-এ এই চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তা একবারে পণ্ড হয়েছে। আসল কথা, এদেশের কথাসাহিত্য এখনও সতীত্বের মোহ কাটাতে পারে নি।

 পাশ্চাত্ত্য লেখকরা যা পেরেছেন রামধনও তা পারবেন, এ ভরসা তাঁর আছে। সমাজের মুখে চেয়ে লিখবেন না, তিনি যা লিখবেন সমাজ তাই শিখবে। রামধন তাঁর পদ্ধতি স্থির করে ফেললেন এবং বাছা বাছা পাশ্চাত্ত্য উপন্যাস মন্থন করে তা থেকে সার উদ্ধার করলেন। এই বিদেশী নবনীতের সঙ্গে দেশী শাক-ভাত আর লঙ্কা মিশিয়ে তিনি যে ভোজ্য রচনা করলেন তা বাংলা সাহিত্যে অপূর্ব। প্রকাশক ভয়ে ভয়ে তা ছাপালেন। বইটি বেরুবামাত্র সাহিত্যের বাজারে হলস্থূল পড়ে গেল।

 প্রবীণ লেখক আর সমালোচকরা বজ্রাহত হয়ে বললেন, এ কি গল্প না খিস্তি? তাঁরা পুলিস অফিসে দ্রুত পাঠালেন, মন্ত্রীদের ধরলেন যাতে বইখানা বাজেয়াপ্ত হয়। কিন্তু কিছুই হল না, কারণ কর্তারা তখন বড় বড় সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত। প্রগতিবাদী নবীন সমাজ গল্পটিকে লুফে নিলেন। এই তো চাই, এই তো নবাগত যুগের বাণী, মিলনের সুসমাচার, প্রেমের মক্তধারা, হৃদয়ের ঊর্ধ্বপাতন, আকাঙ্ক্ষার পরিতর্পণ। একজন উঁচু দরের সহিত্যিক—যিনি চুলে কলপ না দিয়ে মনে কলপ লাগিয়ে আধুনিক হবার চেষ্টা করছেন— বললেন, বেড়ে লিখেছে রামধন। এতে দোষের কি আছে? তোমাদের ঋষিকল্প সবজান্তা লেখক এচ. জি. ওয়েল‍্স-এর নভেল ‘বলপিংটন অভ ব্লপ’ পড়েছ? তাতে যদি কুরচি না পাও তবে রামধনের বইএও পাবে না।

 প্রথমে যে দু-চারটি বিরুদ্ধে সমালোচনা বেরিয়েছিল পরে তা উচ্ছ্বসিত প্রশংসার তোড়ে ভেসে গেল। বইটি কেনবার জন্য দোকানে