পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
ধুস্তুরী মায়া

দোকানে যে কিউ হল তার কাছে সিনেমার কিউ কিছুই নয়। এক বৎসরের মধ্যে সাতটি সংস্করণ ফরিয়ে গেল। রামধন পরম উৎসাহে গল্পের পর গল্প লিখতে লাগলেন। যেসব সম্পাদক পর্বে তাঁকে গাল দিয়েছিলেন তাঁরাই এখন গল্পের জন্য রামধনের দ্বারস্থ হতে লাগলেন। সমস্ত সাহিত্যসভায় রামধনই এখন সভাপতি বা প্রধান অতিথি। তাঁর উপাধিও অনেক—সাহিত্যদিগ্‌গজ, গল্পরাজচক্রবর্তী, উপন্যাসভাস্কর, কথারণ্যকেশরী, ইত্যাদি। তাঁর ভক্তের দল এক বিরাট সভায় প্রস্তাব করলেন যে তাঁকে জগত্তারিণী মেডাল দেওয়া হক। কিন্তু সস্তা নাইন ক্যারাট গোল্ডের তৈরী জানতে পেরে রামধন বললেন, ও আমার চাই না, বাহাত্ত‍ুরে বড়োদের জন্যই ওটা থাকুক।

 যাঁর লক্ষ টাকা জমেছে তিনি কোটিপতি হতে চান, যিনি এম. এল. সি. হয়েছেন তিনি মন্ত্রী হতে চান, সেকালে রায়বাহাদরেরা সি. আই.ই. আর সার হবার জন্য লালায়িত হতেন। রামধনেরও উচ্চাশা ক্রমশ বেড়ে যেতে লাগল। তিনি স্থির করলেন এবারে এমন একটি উপন্যাস লিখবেন যার প্লট কোনও দেশের কোনও লেখক কল্পনাতেও আনতে পারেন নি। ভীর‍ু বাঙালী লেখক কদাচিৎ নায়ককে উচ্ছৃঙ্খল করলেও নায়িকাকে একানরক্তাই করে। বোঝে না যে,নারীরও জংলী জই অর্থাৎ ওআইল্ড ওট‍্স বোনা দরকার, নতুবা তার চরিত্র স্বাভাবিক হতে পারে না। আধুনিক পাশ্চাত্ত্য লেখক অনেক গল্পে নায়িকাকে কিছুকাল স্বৈরিণী করে রাখেন, তাতে তার ‘আবেদন’ বেড়ে যায়। তার পর শেষ পরিচ্ছেদে তার বিয়ে দেন। কিন্ত‍ু এবারে রামধন দেশী বা বিদেশী কোনও গতানুগতিক পথে যাবেন না, একেবারে নতুন নায়িকা সৃষ্টি করবেন। বিশ্বজগতের স্রষ্টা ভগবান নিজের মতলব অনুসারে নরনারীর চরিত্র