পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
ধুস্তুরী মায়া

 তিন একার জমির মাঝখানে একটি প্রকাণ্ড প্রাসাদ, তাতে থাকেন প্রৌঢ় ব্যারিস্টার পি. পি. মল্লিক আর তাঁর রূপসী বিদুষী যুবতী কন্যা রম্ভা। বাড়িতে অন্য কোনও আত্মীয়ের জঞ্জাল নেই, অবশ্য দারোয়ান খানসামা বাবুর্চী যথেষ্ট আছে। মল্লিক সাহেব সকালে ব্রেকফাস্ট করেই তাঁর চেম্বারে যান, সেখান থেকে কোর্টে যান, ফিরে এসে বাড়িতে ঘণ্টা খানিক থেকেই ক্লাবে যান, তার পর অনেক রাত্রে টলতে টলতে ফিরে আসেন। কন্যার বিবাহের জন্য তাঁর কোনও চিন্তা নেই। বলেন, মেয়ে বড় হয়েছে, বুদ্ধিও আছে, সম্পত্তিও ঢের পাবে; উপযুক্ত বর ও নিজেই বেছে নেবে।

 বাড়ির তিন দিকে বাগান, এক দিকে গাছে ঘেরা সবুজ মাঠ। বিকেলে সেখানে নানা জাতের শৌখিন পুরুষের সমাগম হয়। তারা টেনিস খেলে, চা বা ককটেল খায়, তার পর রম্ভাকে ঘিরে আড্ডা দেয়। এরা সবাই তার প্রেমের উমেদার, কিন্তু এপর্যন্ত কেউ কোনও প্রশ্রয় পায় নি, রম্ভা সকলের সঙ্গে সমান ব্যবহার করেছে। পূর্বে অনেক মেয়েও এখানে আসত, কিন্তু পুরুষগ‍ুলোর একচোখোমির জন্য রেগে গিয়ে তারা আসা বন্ধ করেছে।

 এই রকমে কিছুকাল কেটে গেল। যাদের ধৈর্য কম তারা একে একে আড্ডা ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চেষ্টা করতে গেল। বাকী রইল শব্দে আট জন পরম ভক্ত। সাড়ে সাত বলাই ঠিক, কারণ একজন হচ্ছে ইস্কুলের ছাত্র, এবারে ম্যাট্রিক দেবে। সে কথা বলে না, শ‍ুধু হাঁ করে রম্ভাকে দেখে আর বোকার মতন হাসে।

 এই সাড়ে সাত জনের মধ্যে তিন জনের পরিচয় জানলেই চলবে, বাকী সব নগণ্য। প্রথম লোকটি ডকটর বিদ্যাপতি ঘোষ, বিস্তর ডিগ্রী নিয়ে সম্প্রতি বিলাত থেকে ফিরেছে, সরকারী ভাল চাকরি পেয়েছে। দ্বিতীয় হচ্ছে ফ্লাইট-লেফ‍্টেনাণ্ট বিক্রম সিং রাঠোর,