পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রামধনের বৈরাগ্য
৩৫

 রম্ভা বললে, রাধার সঙ্গে শ্যামের বিয়ে হয় নি।

 বিদ্যাপতি বললে, রম্ভা, তুমি স্পষ্ট করে বল তো কাকে বিয়ে করতে চাও।

 —কাকেও নয়। বিবাহের কোনও দরকার নেই, তোমরা তিন জনেই মিলে মিশে আমার কাছে থাকবে। যদি নিতান্ত না বনে তবে নিজের নিজের বাড়িতেই থেকো, ডেট ফিক‍্স করে আমার কাছে আসবে।

 —সমাজের ভয় কর না?

 — আমরা নতুন সমাজ গড়ব। আবার বলছি শোন। তোমাদের তিন জনকেই আমি ভালবাসি। বিনা বিবাহে একসঙ্গে বা পালা করে যদি আমার সঙ্গে বাস কর তবে আমি ধন্য হব, তোমরাও নিশ্চয় সুখী হতে পারবে। তাতে যদি রাজী না হও তবে চিরবিদায়, আমি তিব্বতে চলে যাব। আমার আদর্শ বিসর্জন দিতে পারব না।

 বিদ্যাপতি বললে, স্ত্রীলোক সপত্নীর ঘর করতে পারে, কিন্তু পরুষ সপতি বরদাস্ত করবে না, খুনোখুনি হবে।

 শ্যামসুন্দর বললে, সে ভারী মুশকিলের কথা। আমরা মরে গেলে তুমি কার সঙ্গে ঘর করবে রম্ভা?

 রম্ভা বললে, আমার আর একটু বলবার আছে শোন। তোমরা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ কর, বেশ করে ভেবে দেখ, সেকেলে সংস্কারের বশে আমার এই মহৎ সামাজিক এক্সপেরিমেণ্টটি পণ্ড করে দিও না। দশ দিন পরে তোমাদের সিদ্ধান্ত আমাকে জানিও, তার মধ্যে এখানে আর এসো না, তাতে শ‍ুধু বাজে তর্ক আর কথা কাটাকাটি হবে। এই আমার শেষ কথা।

 তিন প্রণয়ী সাপের মতন ফোঁস ফোঁস করতে করতে চলে গেল।