পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
ধুস্তুরী মায়া

ই পর্যন্ত লেখার পর রামধন একটু চিন্তিত হয়ে পড়লেন। গল্পের প্রথম খণ্ড শেষ হয়েছে, কিন্তু আসল জিনিস সমস্তই বাকী। এর পরেই পট জমে উঠবে, পাত্র-পাত্রীর সম্পর্ক জটিলতর হবে, রামধন ভানুমতীর খেল দেখাবেন। তিনি তাঁর চমৎকার প্লটটির সমাধান মামুলী উপায়ে কিছুতেই হতে দেবেন না। দু জন নায়ককে মেরে ফেলে লাইন ক্লিয়ার করা অতি সহজ, কিন্তু তাতে বাহাদুরি কিছুই নেই। নায়িকাকেও তিনি মারবেন না অথবা দেশের কাজে বা ধর্মকর্মে তার জীবন উৎসর্গ করবেন না। রামধন প্রতিজ্ঞা করেছেন যে রম্ভার পরিকল্পনাটি বাস্তবে পরিণত করবেনই। কিন্তু তিন নায়কের একমমূখী প্রেম এবং এক নায়িকার ত্রিমূখী প্রেম দেখালেই চলবে না, অন্য নরনারীর সঙ্গেও তাদের প্রেমলীলা দেখাতে হবে, তবেই তাঁর গল্পটি একেবারে অভাবিতপূর্ব বৈচিত্র্যময় রসঘন চমকপ্রদ হবে। প্রথম ধাক্কায় ঘাবড়ে গেলেও সমঝদার পাঠকরা পরে ধন্য ধন্য করবে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তিন নায়কের সঙ্গে এক নায়িকার মিলন ঠিক কি ভাবে দেখাবেন, তাদের যৌথ জীবনযাত্রার ব্যবস্থা কি রকম করবেন, সমাজের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কি ভাবে বজায় থাকবে—এই রকম নানা সমস্যা তাঁর মনে উঠতে লাগল। রামধন দমবার পাত্র নন। এতটা যখন গড়তে পেরেছেন তখন শেষটাই বা না পারবেন কেন। তাড়াতাড়ি করা ঠিক হবে না, তিনি দিনকতক লেখা বন্ধ রেখে বিশ্রাম নেবেন। তার মধ্যে সমাধানের একটা প্রকৃষ্ট পদ্ধতি নিশ্চয় তাঁর মাথায় এসে পড়বে।

 রামধন কলকাতা ছেড়ে কোন্নগরে গঙ্গার ধারে তাঁর এক বন্ধুর বাগানবাড়িতে এসে বিশ্রাম করতে লাগলেন। বিশ্রাম ঠিক নয়, এক-