পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রামধনের বৈরাগ্য
৩৭

রামধন বেশী জখম হন নি। একটু পরে তিনি প্রকৃতিস্থ হয়ে কোনও রকমে বিছানা থেকে উঠলেন এবং ননীবালার মুখে চোখে জলের ছিটে দিয়ে তাঁকে চাঙ্গা করলেন।

 ননীবালা ক্ষীণস্বরে জিজ্ঞাসা করলেন, গেছে?

 —গেছে।

 —ডাকাত?

 —ডাকাত নয়।

 —সাহিত্যিক গুণ্ডা?

 — তাও নয়। বেতাল জান? নিরাশ্রয় প্রেত মরা মানুষের দেহে ভর করলে বেতাল হয়। শুনেছি, যদি পছন্দ মতন লাশ না পায় তবে তারা গল্পের খাতায় ঢুকে গিয়ে নায়ক-নায়িকার ওপর ভর করে। এ তাদেরই কাজ।

 —তোমার ওপর ওদের রাগ কেন?

 —বোধ হয় সেকেলে প্রেতাত্মা, আমার প্লটের রসগ্রহণ করতে পারে নি।

 — তুমি আর ছাই ভস্ম লিখো না বাপু।

 —রাম বল, আবার লিখব! দেখছ না, আমার সমস্ত খাতা কুচি কুচি করে ছিঁড়েছে, দামী ফাউনটেন পেনটা চিবিয়ে নষ্ট করেছে, ডান হাতের বুড়ো আঙুলটা থেঁতলে দিয়েছে। তোমার দিদিমার গুরুদেব বিষ্ণুপ্রয়াগে থাকেন না? তাঁর আশ্রমেই বাস করব ভাবছি। ভোরের গাড়িতে কলকাতায় ফিরে যাই চল, তার পর দিন দুইএর মধ্যে সব গ‍ুছিয়ে নিয়ে চুপি চুপি বিষ্ণুপ্রেয়াগ রওনা হব।

১৩৫৮