পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভরতের ঝুমঝুমি

হৃষীকেশ তীর্থে গঙ্গার ধারে যে ধর্মশালা আছে তারই সামনের বড় ঘরে আমরা আশ্রয় নিয়েছি —আমি, আমার মামাতো ভাই পুলিন, আর তার দশ বছরের ছেলে পল্টু। তা ছাড়া টহলরাম চাকর আর চারটে সাদা ইঁদুরও আছে। ইঁদুর আনতে আমাদের খুব আপত্তি ছিল, কিন্তু পল্টু, বললে, বা রে, আমি সঙ্গে না নিলে এদের খাওয়াবে কে? বাড়ির ছটা বেরালই তো এদের খেয়ে ফেলবে। যুক্তি অকাট্য, ইঁদুরের ভাড়াও লাগে না, সুতরাং সঙ্গে আনা হয়েছে। তারা রাত্রে একটা খাঁচার মতন বাক্সে বাস করে, দিনের বেলায় পল্টুর পকেটে বা মুঠোর মধ্যে থাকে, অথবা তার গায়ের ওপর চরে বেড়ায়।

 সমস্ত সকাল টো টো করে বেড়িয়েছি, এখন বেলা এগারটা, প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে। চা তৈরির সরঞ্জাম আমরা সঙ্গে এনেছি, কিন্তু রান্নার কোনও যোগাড় নেই, তার হাঙ্গামা আমাদের পোষায় না। দোকান থেকে এক ঝুড়ি মোটা মোটা আটার লাচি, খানিকটা স্বচ্ছন্দবনজাত কচুঘেঁচুর ঘণ্ট, আর সের খানিক নড়ির মতন শক্ত পেড়া আনানো হয়েছে। আমরা স্নান সেরে ঘরের দরজা বন্ধ করে খাটিয়ায় বসে কোলের ওপর শালপাতা বিছিয়েছি, টহলরাম পরিবেশনের উপক্রম করছে, এমন সময় বাইরে থেকে ভাঙা কর্কশ গলায় আওয়াজ এল —অয়মহং ভোঃ!

 কথাটা কোথায় যেন আগে শুনেছি। দরজা খুলে বাইরে এসে দেখলুম, একজন বৃদ্ধ সাধুবাবা। রংটা বোধ হয় এককালে ফরসা ছিল, এখন তামাটে হয়ে গেছে। লম্বা, রোগা, মাথার জটাটি ছোট