পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
88
ধুস্তুরী মায়া

যদি আমার গাত্রে বস্ত্রে আর জটায় আশ্রয় নিয়ে থাকে তো থাকুক না। তুমি তাদের তাড়াবার কে?

 টহলরাম খাবার নিয়ে এল। মহামনি দুর্বাসার আদেশে আমরা তাঁর সঙ্গেই খাটিয়ায় বসে ভোজন করলাম। ভোজনান্তে আমি সিগারেটের টিনটি এগিয়ে দিয়ে বললুম, প্রভু, এ জিনিস চলবে কি? এর চেয়ে উঁচুদরের ধর্মোৎপাদক বস্তু তো আমাদের নেই।

 একটি সিগারেট তুলে নিয়ে দুর্বাসা বললেন, এতেই হবে। গঞ্জিকা আমার সয় না, বাতিক বৃদ্ধি হয়। কই, তোমরা ধূমপান করবে না?

 লজ্জায় জিব কেটে বললাম, হেঁ হেঁ, আপনার সামনে কি তা পারি?

 —ভণ্ডামি ক’রো না। আমার সামনে একরাশ লুচি গিলতে বাধল না, আর যত লজ্জা ধোঁয়ায়! নাও নাও, টানতে আরম্ভ কর।

 অগত্যা পুলিন আর আমিও সিগারেট ধরালুম। শোনবার জন্য আমরা উদ‍্গ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছি দেখে দুর্বাসা তাঁর ইতিহাস আরম্ভ করলেন।


কুন্তলার কথা জান তো? কালিদাস তার নাটকে লিখেছে। মেয়েটা আমার ডাকে সাড়া দেয় নি তাই হঠাৎ রেগে গিয়ে তাকে অভিশাপ দিয়েছিলুম—তুমি যার কথা ভাবছ সে তোমাকে দেখলে চিনতে পারবে না। শকুন্তলা এমনি বেহুঁশ যে আমার কোনও কথাই তার কানে গেল না। কিন্তু তার এক সখী শুনতে পেয়েছিল। সে আমার কাছে এসে পায়ে ধরে অনেক কাকুতি মিনতি করলে। তার নাম অনসূয়া। আমার মায়েরও ওই নাম, তাই প্রসন্ন হয়ে অভিশাপ