পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
ধুস্তুরী মায়া

ভেতর থেকে ইঁদুরটাকে টেনে বার করলে। তার পর বললে, ঝুমঝুম শব্দ হচ্ছে কেন?

 আমি লাফিয়ে উঠে বললুম, ঝুমঝুম শব্দ? বলিস কি রে! প্রভু, আপনার দাড়িটি একবার নাড়ুন তো।

 দুর্বাসা দাড়ি নাড়লেন। সেই নিবিড় শ্মশ্রুজাল ভেদ করে ক্ষীণ শব্দ নির্গত হল—ঝুম ঝুম ঝুম। যেন নৃত্যপরা মেনকার নূপুরনিক্বণ দূরদূরান্তর থেকে ভেসে আসছে।

 পুলিন দাড়ির নীচের ঝুঁটিটা একবার টিপে দেখলে, তার পর গেরো খুলতে লাগল। দুর্বাসা বললেন, আরে লাগে লাগে! কে তাঁর কথা শোনে। আমি তাঁর মাথাটি জোর করে ধরে রইলুম, পুলিন পড়পড় করে দাড়ি ছিড়ে ভেতর থেকে ঝুমঝুমি বার করলে। সোনার কি রূপোর কি টিনের বোঝা গেল না, ময়লায় কালো হয়ে গেছে, কিন্তু বাজছে ঠিক।

 পল্টু চুপি চুপি বললে, এক্স-রে করলে কোন্ কালে বেরিয়ে পড়ত, নয় বাবা? পল্টুর অভিজ্ঞতা আছে, বছর দুই আগে সে একটা পয়সা গিলেছিল।


দুর্বাসা একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, একেই বলে গেরোর ফের। ঝুমঝুমিটি যে যত্ন করে দাড়ির গেরোর মধ্যে গ‍ুঁজে রেখেছিলুম তা মনেই ছিল না। তার পর মাথায় হাত দিয়ে বললেন, বৎস, আমি আশীর্বাদ করছি তুমি রাজা হবে।

 আমি বললুম, ও আশীর্বাদ আর ফলবার উপায় নেই প্রভু, রাজা টাজা লোপ পেয়েছে। বরং এই আশীর্বাদ করুন যেন ও মন্ত্রী হতে পারে, অন্তত পাঁচ বছরের জন্য।