পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রেবতীর পতিলাভ

বিষ্ণুপুরাণে রাজা রৈবত-ককুদ্মী ও তাঁর কন্যা বেবতীর একটি বিচিত্র আখ্যান আছে। সেই ছোট আখ্যানটি বিস্তারিত করে লিখছি। এই পবিত্র পুরাণকথা যে কন্যা শ্রদ্ধাসহকারে একাগ্রচিত্তে পাঠ করে তার অচিরে সর্বগুণান্বিত বাঞ্ছিত পতি লাভ হয়।

 পুরাকালে কুশস্থলী নগরীতে বৈবত-ককুদ্মী নামে এক ধর্মাত্মা রাজা ছিলেন। তিনি রেবত রাজার পুত্র সেজন্য তাঁর এক নাম রৈবত, এবং ককুদ্‌যুক্ত বৃষ অর্থাৎ ঝুঁটিওয়ালা ষাঁড়ের তুল্য তেজস্বী সেজন্য অপর নাম ককুদ্মী। সেকালে মহত্ত্ব ও বীরত্বের নিদর্শন ছিল সিংহ ব্যাঘ্র ও বৃষ, সেজন্য কীর্তিমান লোকের উপাধি দেওয়া হত—পুরুষসিংহ, নরশার্দূল, ভরতর্ষভ, মুনিপুংগব, ইত্যাদি।

 রৈবত রাজার রেবতী নামে একটি কন্যা ছিলেন, তিনি রূপে গণে অতুলনা। রেবতী বড় হলে তাঁর বিবাহের জন্য রাজা পাত্রের খোঁজ নিতে লাগলেন। অনেক পাত্রের বিবরণ সংগ্রহ করে রৈবত একদিন তাঁর কন্যাকে বললেন, দেখ রেবতী, আব বিলম্ব করতে পারি না, তোমার বয়স ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। তুমি অত খুঁত ধরলে তোমার বরই জুটবে না। আমি বলি কি, তুমি কাশীরাজ তুন্দবর্ধনকে বিবাহ কর।

 রেবতী ঠোঁট কুঁচকে বললেন, অত্যন্ত মোটা আর অনেক স্ত্রী। আমি সতিনের ঘর করতে পারব না।

 রাজা বললেন, তবে গান্ধারপতি গণ্ডবিক্রমকে বিবাহ কর, তাঁর স্ত্রী বেশী নেই।