পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রেবতীর পতিলাভ
৬১

দ্রবীভূত হয়ে অসংখ্য নদীরূপে প্রবাহিত হচ্ছে। গাছপালাও আর আগের মতন নেই, জন্তুদের আকৃতিও বদলে গেছে। নারদ বুঝিয়ে দিলেন যে বিগত আঠারো কোটি বৎসরে ধীরে ধীরে এইসব প্রাকৃতিক পরিবর্তন ঘটেছে।

 পুষ্পক রথ যখন রৈবত-ককুদ্মীর ভূতপূর্ব রাজ্যের নিকটে এল তখন নারদ বললেন, মহারাজ, লোকালয়ে নেমে কাজ নেই, লোকে তোমাদের রাক্ষস মনে করে গোলযোগ বাধাতে পারে।

 রৈবত আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করলেন, রাক্ষস মনে করবে কেন? কালক্রমে মানুষের বৃদ্ধিও কি লোপ পেয়েছে?

 নারদ বললেন, আমাকে দেখে কিছু বলবে না, কারণ আমার অণিমা প্রভৃতি যোগৈশ্বর্য আছে, ইচ্ছামত লম্বা কিংবা বেঁটে হয়ে জনসাধারণের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারি। কিন্তু তোমাদের তো সে শক্তি নেই।

 —কিছুই বুঝতে পারছি না দেবর্ষি। আবার কি নূতন সংকট উপস্থিত হল?

 —নূতন কিছু হয় নি, সবই যুগপরিবর্তনের ফল। তোমরা সত্যযুগের গোড়ায় জন্মেছ, যুগলক্ষণ অনুসারে তুমি লম্বায় একুশ হাত। মেয়েরা পুরুষের চেয়ে একটু খাটো হয়, তাই রেবতী উনিশ হাত লম্বা। কিন্তু ও এখনও ছেলেমানুষ, পরে আরও আধ হাত বাড়বে।

 —আপনি কি যা-তা বলছেন! আমার এই রাজদণ্ডটি ঠিক এক হাত। এই দিয়ে আমাকে মেপে দেখুন না, আমি লম্বায় বড় জোর চার হাত হব।

 —তোমার হাতের মাপে তাই হতে পার বটে, কিন্তু সে মাপ ধরছি না। কলিযুগে মানুষের হাতের যে মাপ, সকল শাস্ত্রে তাই