পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রেবতীর পতিলাভ
৬৭

 রেবর্তী মন্ত্রমুগ্ধবৎ নিশ্চল হয়ে রইলেন। বলদেব ধীরে ধীরে লাঙ্গলদণ্ড আকর্ষণ করলেন। সলতে টেনে নিলে প্রদীপের শিখা যেমন ক্রমশ ছোট হতে থাকে, রেবতীও সেইরকম ছোট হতে লাগলেন। কৃষ্ণ সতর্ক হয়ে দেখছিলেন। বলে উঠলেন, থাম থাম, আর নয়—এঃ দাদা, তুমি বড্ড বেশী টেনে ফেলেছ!

 বলদেব লাঙ্গল নামিয়ে নিলেন। তার পর নিজের হাত দিয়ে রেবতীকে মেপে বললেন, তাই তো, করেছি কি, রেবতী তিন হাত হয়ে গেছে! আচ্ছা, এখনই ঠিক করে দিচ্ছি। এই বলে তিনি রেবতীকে তুলে ধরে বললেন, প্রিয়ে, আমার অপটুতা মার্জনা কর। তুমি এই বকুলশাখা অবলম্বন করে ক্ষণকাল ঝুলতে থাক।

 রেবতীর তখন ভাববার শক্তি নেই। তিনি দু হাতে গাছের ডাল ধরে ঝুলতে লাগলেন, বলদেব তাঁর দুই পা ধরে ধীরে ধীরে টানতে লাগলেন। কৃষ্ণ বললেন, আর একটু—আরও একটু—এই বারে থাম, ঠিক হয়েছে।

 রেবতীকে নামিয়ে নিজের পাশে দাঁড় করিয়ে বলদেব সহাস্যে বললেন, কৃষ্ণ, বর বড় না কনে বড়?

 কৃষ্ণ বললেন, লম্বায় কনে সাত আঙুল ছোট, কিন্তু মর্যাদায় তোমার চাইতে ঢের বড়, কারণ ইনি আঠারো কোটি বৎসর আগে জন্মেছেন। চমৎকার মানিয়েছে। এই বলে কৃষ্ণ দুজনকে প্রণাম করলেন।

 নিকটে একটি ছোট জলাশয় ছিল। রেবতীকে তার ধারে এনে যুগল মূর্তির প্রতিবিম্ব দেখিয়ে বলদেব বললেন, রেবতী, দেখ তো, এইবারে আমি তোমার যোগ্য হয়েছি কিনা। এখন মনে ধরেছে কি?