পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
ধুস্তুরী মায়া

মুচুকুন্দ রায়ের বাড়ি থেকে পঞ্চানন চৌধুরীর বাড়ি বেশী দূর নয়। কৃপারাম সেখানে উপস্থিত হলেন। পঞ্চানন বললেন, নমস্কার শেঠজী, অসময়ে কি মনে করে? খবর সব ভাল তো?

 কৃপারাম বললেন, ভাল আর কোথা পঞ্চু ভাই, ঘিএর কনট্রাক্ট তো বিলকুল মুচুবাবু পেয়ে গেল। আমার বড় আশা ছিল যে কমসে-কম চার লাখ মুনাফা হবে, আমার তিন লাখ তোমার এক লাখ থাকবে, তা হল না। এখন শুন পঞ্চবাবু, তোমাকে একটি কাম করতে হবে। একটি উল্লু—তোমরা যাকে বল পেঁচা—আমার কোঠি থেকে পালিয়ে মুচুকুন্দবাবুর কোঠিতে গেছে। তিনি ফিরত দিতে চাচ্ছেন না। ছিনিয়ে আনতে হবে।

 পঞ্চানন বললেন, পেঁচায় আপনার কি দরকার?

 —বহুত ভাল পেঁচা, আমার ঘরবালীর খুব পিয়ারের পেঁচা। তাঁর এক বঙ্গালিন সহেলী আছেন, তিনি বলেছেন পেঁচাটি হচ্ছে লছমী মায়ীর সওয়ারি অসলী লক্ষ্মী পেঁচা। এই পেঁচার আশীর্বাদেই তো পরসাল আমাদের কনট্রাক্ট মিলেছিল। আবার যেমনি সে মুচুকুন্দবাবুর কাছে গেল অমনি তিনি ঘিএর অর্ডার পেয়ে গেলেন।

 —বটে! তা হলে তো পেঁচাটিকে উদ্ধার করতেই হবে। আপনি মুচুকুন্দর নামে নালিশ ঠুকে দিন।

 —নালিশে কিছু হবে না, পেঁচা তো পিঁজরায় ছিল না, আমার কোঠির হাথায় আমগাছে থাকত। তুমি দুসরা মতলব কর, যেমন করে পার পেঁচাটিকে আমার কাছে পৌঁছে দাও, খরচা যা লাগে আমি দিব।

 পঞ্চানন একটু ভেবে বললেন, শক্ত কাজ, সময় লাগবে, হাজার দু-হাজার খরচও পড়তে পারে।