পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লক্ষ্মীর বাহন
৮১

মোড়া। পঞ্চানন অত্যন্ত খুশী হয়ে মাল সমেত লখাকে নিজের অফিস-ঘরে নিয়ে গিয়ে দরজায় খিল দিলেন। কাপড় সরিয়ে নিলে দেখা গেল পেঁচা বুঁদ হয়ে চুপ করে বসে আছে।

 লখা বললে, শুনুন পঞ্চুকাকা, এটাকে দিনের বেলায় ঘরে বন্ধ করে রাখবেন, কিন্তু রাত্রে ছেড়ে দেবেন, ও ইঁদুর পাখির ছানা এইসব ধরে খাবে, নইলে বাঁচবে না। আর এই শিশিটা রাখুন, এতে পাঁচ শ ভাগ চিনির সঙ্গে এক ভাগ কোকেন মিশনো আছে। রোজ বিকেলে চারটের সময় পেঁচাকে অল্প এক চিমটি খেতে দেবেন। একটা ছোট রেকাবিতে রেখে নিজের হাতে ওর সামনে ধরবেন, তা হলেই খুঁটে খুঁটে খাবে। যেখানেই থাকুক রোজ মৌতাতের সময় ঠিক আপনার কাছে হাজির হবে।

 পঞ্চানন মুগ্ধ হয়ে বললেন, উঃ, লখু তোমার কি বুদ্ধি বাবা! কোকেন ধরালে পেঁচা আর কারও বাড়ি যাবে না, কি বল?

 লখা বললে, যাবার সাধ্য কি, ও চিরকাল আপনার গোলাম হয়ে থাকবে।


বার দিন হয়ে গেল তবু পেঁচার কোনও খবর আসছে না দেখে কৃপারাম উদ্‌বিগ্ন হয়ে পঞ্চাননের বড়ি এলেন। পঞ্চানন জানালেন, অনেক হাঙ্গামা আর খরচ করে তিনি পেঁচাটিকে হস্তগত করতে পেরেছেন।

 কৃপারাম উৎফুল্ল হয়ে বললেন, বাহবা পঞ্চু ভাই! এনে দাও, এনে দাও, আমি এখনই মোটরে করে নিয়ে যাব। খরচ কত পড়েছে বল, আমি চেক লিখে দিচ্ছি।

 পঞ্চানন একটু চুপ করে থেকে বললেন, খরচ বিস্তর লাগবে।