পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লক্ষ্মীর বাহন
৮৫

 —ও, তাই বলুন, পেঁচাই হচ্ছে বখেড়ার মূল! মেয়েমানুষ হলে বুঝতুম, পেঁচার ওপর আপনাদের এত খাহিশ কেন? কাবাব বানাবেন নাকি?

 —এসব হিন্দুশাস্ত্রের কথা, আপনি বুঝবেন না। আমার কাজটি উদ্ধার করে দিন, সরকারের কাছে আপনার সুনাম হবে, খাঁ বাহাদুর খেতাব পেয়ে যাবেন, আমিও আপনার মান রাখব।

 করিমুল্লার কাছে প্রতিশ্রুতি পেয়ে মুচুকুন্দবাবু বাড়ি ফিরে গেলেন।


রদিন রাত বারটার সময় পঞ্চানন চৌধুরীর বাড়িতে ভীষণ ডাকাতি হল। নগদ টাকা আর গহনা সব লুট হয়ে গেল। পঞ্চাননের মাথায় আর পায়ে এমন চোট লাগল যে তিনি পনের দিন হাসপাতালে বেহুঁশ হয়ে রইলেন। তিনটে ডাকাত ধরা পড়ল, কিন্তু ফজলু আর মিসরিলাল পালিয়ে গেল। কৃপারাম পেঁচার খাঁচা নিয়ে একটা গলি দিয়ে সরে পড়বার চেষ্টা করছিলেন, তিনিও গ্রেপ্তার হলেন। সকালবেলা স্বয়ং খাঁ সাহেব করিমুল্লা মুচুকুন্দর হাতে পেঁচা সমর্পণ করলেন। মাতঙ্গী দেবী শাঁক বাজিয়ে লক্ষীর বাহনকে ঘরে তুললেন।

 পেঁচা অক্ষত শরীরে ফিরে এসেছে, কিন্তু তার ফুর্তি নেই। সমস্ত দিন সে মুখ হাঁড়ি করে বসে রইল। নিশ্চিন্ত হবার জন্য পঞ্চানন তাকে ডবল মাত্রা খাওয়াচ্ছিলেন, তাই বেচারা ঝিমিয়ে আছে। বিকালবেলা মৌতাতের সময় সে ছটফট করতে লাগল, মুচুকুন্দ কাছে এলে তাঁর হাতে ঠুকরে দিলে। মাতঙ্গী আদর করে বললেন, কি হয়েছে কি হয়েছে আমার পেঁচু বাপধনের! পেঁচা তাঁর হাতে ঠোকর