পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
দারোগার দপ্তর, ১৫৮ সংখ্যা।

 শ। সে আপনার জীবননাশ কেন করিবে?

 “বুঝিতে পার নাই?” একটু হাসিয়া কমলা একটী অতি প্রকাণ্ড কটাক্ষ শঙ্কর দাসের উপর নিক্ষেপ করিলেন, শঙ্কর সে তেজ সহ্য করিতে পারিল না। সে তেজে খোদ শঙ্করকে খাই খাই ডাক ছাড়িতে হইয়াছিল, সে তেজে আজ শঙ্কর দাস সহিবে? পারিল না, গলিয়া গেল। ভ্যাবা গঙ্গারামেযর মত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল,—

 ও ব্যক্তির নাম যথার্থই কি অমরচাঁদ, না আর কোন নাম আছে?

 রা। হাঁ— উহার নাম অমরচাঁদ। আমার ভয়ানক শত্রু, নাম করিলে শরীর কাঁপিয়া উঠে, উহার ভয়ে আমার আহার নিদ্রা নাই, উহার মরণ হইলে আমি নিরাপদ।

 শ। ইহার ভিতর যে কি বিশেষ কারণ আছে, তাহা ত সম্যকরূপে বুঝিতে পারিলাম না।

 রা। যখন আমি দেশ থেকে আসি, তখন হইতেই ও আমার পেছু পেছু। ও লোকটা মলেই বাঁচি, যখনই তোমার সহিত দেখা হইয়াছে, তোমাকে চিনিয়াছি—মনে মনে ভাবি, কত সুখ, কত সুখ জীবন থাকিলে—এক একবার ভাবি, এ প্রাণ আর রাখিব না, কিন্তু আমার সুখ মনে হইলেই সে চিন্তা সব কোথায় চলিয়া যায়।

 শ। এ কি যথার্থ সত্য যে, তুমি আমার।

 রা। এখন বুঝলে, কেন আমি সব কথা প্রকাশ করিয়া বলি না? ও লোকটা কখন কোন্ বেশে যে উপস্থিত হয়, নির্ণয় করা কঠিন।