পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

INA নন্দনে নরক আমিনা ভাত ও স্তম্ভিত ভাবে দাড়াইল ; অতর্কিত পথিকের সম্মুখে বিষধর সর্প ফণা তুলিয়া দংশনোপ্তত হইলে তাহার মনের ভাব ষেরূপ হয়, আমিনার মনের অবস্থাও প্রায় সেইরূপ হইল। সে প্রথমে মনে করিল, পলাইয়। যাইবে ; কিন্তু তাহার প৷ উঠিল না, সে নিশ্চল ছবির মত দাড়াইয়া রহিল । বৃদ্ধ এজরা সাহেবও আমিনাকে দেখিয়া অল্প বিস্মিত হন নাই ; তিনি মনে করিয়াছিলেন, তিনি কোনও অজ্ঞাত কুলশীল। অশিক্ষিতা অসভ্য৷ দরিদ্র। পল্লীবালাকে দেখিবেন ; কিন্তু তৎপরিবর্তে সুশিক্ষিতা সন্ত্রাস্তবংশীয়, সমাজে সুপরিচিত সুন্দরী আমিনাকে দেখিয়া ক্রোধ ও বিস্ময় কোন ভাবটি তাহার মনে অধিক প্রবল হইয়াছিল, তাহ অনুমান করা কঠিন। তিনি তীক্ষ দৃষ্টিতে যুবতীর আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করিয়া সহাস্তে বলিলেন, “আমাকে দেখিয়া বোধ হয় তুমি খুলী হইতে পার নাই ?” আমিন কুষ্ঠিত স্বরে বলিল, “মহাশয়—” এজর সাহেব বলিলেন, “আর বলিতে হইবে কেন ? আমি সকলই বুঝিতে পারিয়াছি। কোনও যুবকের সহিত সাক্ষাতে আসিয়া তাহার পরিবর্তে হঠাৎ তাহার পিতার সহিত সাক্ষাৎ হইলে, কোন যুবতীরই মন প্রসন্ন হয় না। কিন্তু বায়রামজির কোনও অপরাধ নাই, তাহার সাধ্য হইলে, সে এখানে আসিয়া তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিত।” আমিন কেবল অসাধারণ বুদ্ধিমতি নহে, তাহার সাহসও অত্যন্ত অধিক ; সে সম্পূর্ণ সংযত ভাবে বৃদ্ধকে বলিল, “মহাশয়, আপনার অনুমান মিথ্যা নহে, আমি বায়রামজির সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়া ছিলাম ; সাক্ষাৎ হইল না, অগত্যা আমি ফিরিয়া চলিলাম।”