নববিধান p এই হাসির উত্তর বিভা কটুকণ্ঠেই দিল। ছেলেটিকে ডাকিয়া কহিল, তোমার বাবা বলেচেন আমার ওখানে গিয়ে থাকতে । আমার নষ্ট করবার সময় নেই সোমেন-যাও ত শীগগির কাপড় প’রে নাও ; আমাকে আবার একবার নিউ-মার্কেট ঘুরে যেতে 変びマ I দু'জনের মাঝখানে পড়িয়া সোমেন মানমুখে ভয়ে ভয়ে বলিল, মা যে যেতে বারণ করচেন, পিসীমা ? তাহার বিপদ দেখিয়া উষা তাতোতাড়ি বলিল, তোমাকে যেতে আমি বারণ করাচিনে বাবা ; আমি শুধু এই বলচি যে, তুমি চলে গেলে একলা বাড়ীতে আমার কষ্ট হবে । ছেলেটি মুখে ইহার জবাব কিছু দিল না, কেবল অত্যন্ত কাছে ঘোষিয়া আসিয়া বিমাতার আঁচল ধরিয়া দাড়াইল । তাহার চুলেব মধ্য দিয়া আঙ্গুল বুলাইতে বুলাইতে উষা হাসিয়া কহিল, ও যেতে চায় না ঠাকুরবি । লজ্জায় ও ক্ৰোধে বিভার মুখ কালো হইয়া উঠিল, এবং অতিসভ্য-সমাজের সহস্র উচ্চাঙ্গের শিক্ষা সত্ত্বেও সে আপনাকে সম্বরণ করিতে পারিল না-কহিল, ওর কিন্তু যাওয়াই উচিত, এবং আমার বিশ্বাস, আপনি অন্যায় প্রশ্ৰয় না দিলে ও বাপের আজ্ঞা পালন マリマ l উষার ঠোঁটের কোণ দুটা শুধু একটুখানি কঠিন হইল, আর তাহার মুখের চেহারায় কোন ব্যতিক্রম লক্ষিত হইল না ; কহিল, আমরা বুড়োমানুষই নিজের উচিত ঠিক করে উঠতে পারিনে ভাই, সোমেন ত ছেলেমানুষ। ও বোঝেই বা কতটুকু। আর অন্যায় প্ৰশ্ৰয়ের কথা যদি তুললে ঠাকুরবি, আমি অনেক ছেলে মানুষ করেচি, এ-সব আমি সামলাতে জানি। - তোমাদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। বিভা কঠোর হইয়া কহিল, দাদাকে তা হলে চিঠি লিখে দেবো ।
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।