পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নববিধান VbW9 ক্ষণে ক্ষণে আড়াচোখে চাহিয়া সে স্ত্রীর মুখের চেহারা দেখিবার চেষ্টা করিল, কিন্তু তাহার নিশ্চয় বোধ হইল, উষা ইচ্ছা করিয়াই আলোটার দিকে আড় হইয়া বসিয়াছে। অন্যান্য দিনেব মত আজ সে খাইতে পারিল না । যেজন্য আজ তাহার আহারে রুচি ছিল না, তাহার কারণ আলাদা ; তথাপি জিজ্ঞাসা না করা সত্ত্বেও গায়ে পড়িয়া শুনাইয়া দিল যে, অনভ্যস্ত খাওয়া-পরা শুধু দু-চারদিনই চলিতে পারে, কিন্তু প্ৰত্যহিক ব্যাপারে দাড় করাইলে আর স্বাদ থাকে না-তখন অরুচি অত্যাচারে গিয়ে দাড়ায় । কথাটা তর্কের দিক দিয়া যাই হোক, এ-ক্ষেত্রে সত্য নয় জানিয়া উষা চুপ করিয়া রহিল। মিথ্যা জিনিষটা যে নিশ্চয়ই মিথ্যা, ইহা প্ৰমাণ করিবার জন্য তর্ক করিতে কোনদিনই তাহার প্রবৃত্তি হইত না । কিন্তু এমন করিয়া নিঃশব্দে অস্বীকাব করিলে প্রতিপক্ষের রাগ বাড়িয়া যায়। তাই, শুইতে আসিয়া শৈলেশ খামোক বলিয়া উঠিল, আমরা তোমার প্রতি একদিন অতিশয় অন্যায় করেছিলাম তা মানি, কিন্তু তাই বলে আজ তোমার ছাড়া আর কারও কোন ব্যবস্থাই চলবে না, এও ত ভারি জুলুম। এরূপ শক্ত কথা শৈলেশ প্ৰথম দিনটাতেও উচ্চারণ করে নাই । উষা মনে মনে বোধ হয় অত্যন্ত বিস্মিত হইল, কিন্তু মুখে শুধু বলিল, আমি বুঝতে পারিনি। কিন্তু এমন করিয়া অত্যন্ত বিনয়ে কবুল করিয়া লইলে আরও রাগ বাড়ে । শৈলেশ কহিল, তোমার বোঝা উচিত ছিল । আমাদের শিক্ষা, সংস্কার, সমাজ সমস্ত উল্টে দিয়ে যদি এ-বাড়ীকে তোমার বাপের বাড়ী বানিয়ে তুলতে চাও ত আমাদের মত লোকের পক্ষে বড় মুস্কিল হতে থাকে। সোমেনকে বোধ হয় কাল ওর পিসীর বাড়ীতে পাঠিয়ে দিতে হবে । তুমি কি বল ? উষা কহিল, ওর ভালর জন্য যদি প্রয়োজন হয় তা দিতে হবে दछेकि।