পাতা:নবীন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবীন

দল, উৎসবে তোমাদের চাপল্য ওদের ভালো লাগ্চে না। শৈবালপুঞ্জিত গুহাদ্বারে কালো কালেৃো শিলাখণ্ডেল মতো তমিস্রগ্রহণ গাম্ভীর্য্যে ওরা নিশ্চল হয়ে ভ্রুকুটি করচে, নির্ঝরণী ওদের সামনে দিয়ে বেরিয়ে প’ড়েচে এই আনন্দময় বিশ্বের আনন্দপ্রবাহ দিকে দিগন্তে বইয়ে দিতে, নাচে গানে কল্লোলে হিল্লোলে কলহাস্যে;— চূর্ণ চূর্ণ সূর্য্যের আলো উদ্বেল তরঙ্গভঙ্গের ছন্দে ছন্দে বিকীর্ণ ক’রে দিতে। এই আনন্দ-আবেগের অন্তরে অন্তরে যে-অক্ষয় শৌর্য্যের অনুপ্রেরণা আছে, সেটা ওদের শাস্ত্রবচনের বেড়ার বাইরে দিয়ে চ’লে-গেল। ভয় ক’রো না তোমরা; যে-রসরাজের নিমন্ত্রণে তোমরা এসেচো, তাঁর প্রসন্নতা যেমন নেমেচে আমাদের নিকুঞ্জ অন্তঃস্মিত গন্ধরাজ মুকুলের প্রচ্ছন্ন গন্ধরেণুতে তেমনি নামুক্ তোমাদের কণ্ঠে কণ্ঠে, তোমাদের দেহলতার নিরুদ্ধ নটনোৎসাদে। সেই যিনি সুরের গুরু, তাঁর চরণে নৃত্যের অর্ঘ্য নিবেদন ক’রে দাও।

সুরের গুরু, দাও গো সুরের দীক্ষা
মোরা সুরের কাঙাল এই আমাদের ভিক্ষা।
মন্দাকিনীর ধারা,
উষার শুকতারা,
কনকচাঁপা কানে কানে যে-সুর পেলো শিক্ষা।
তোমার সুরে ভরিয়ে নিয়ে চিত্ত
যাবো যেথায় বেসুর বাজে নিত্য।
কোলাহলের বেগে
ঘূর্ণি উঠে জেগে,
নিয়ো তুমি আমার বীণার সেইখানেই পরীক্ষা॥