পাতা:নব্য জাপান ও রুষ জাপান যুদ্ধের ইতিহাস - উমাকান্ত হাজারী.pdf/৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩০
নব্য জাপান

মহা সমিতি গঠন করেন। সভ্যতাভিমানী ইয়ুরােপীয় রাজন্যবর্গ নররুধিরে বসুন্ধরা সিক্ত হইতে দেখিয়াও প্রজা সাধারণকে যে অধিকার প্রদান করিতে সঙ্কোচ বােধ করেন, জাপান সম্রাট স্বয়ং উদ্যোগী হইয়া প্রজাগণকে সেই অধিকার প্রদান করিলেন।

 এসিয়া খণ্ডে জাপানেই সর্ব্বপ্রথমে রাজার শাসনদণ্ড প্রজার হস্তগত হয়। এই প্রাচ্য মহাসাগরের ক্ষুদ্রদ্বীপের অধীশ্বরকে যুদ্ধে পরাস্ত করিয়া তাঁহার প্রজারা শাসনদণ্ড গ্রহণ করে নাই। রাজা স্বেচ্ছায়, উপযাচক হইয়া প্রজাদিগের হস্তে শাসন ক্ষমতা প্রদান করিয়াছিলেন। এরূপ মহানুভবতা জগতের ইতিহাসে অতি বিরল। যে শাসনক্ষমতা লাভ করিবার জন্য রুষিয়ার কোটী কোটী প্রজা বহু বৎসর হইতে প্রাণপণে চেষ্টা করিতেছে, নরশােণিত ধারায় পৃথিবী কর্দ্দমাক্ত করিতেছে, সেই শাসনদণ্ড জাপানীরা অযাচিত ভাবে প্রাপ্ত হইয়াছে। জাপান সম্রাট মৎসুহিতো দেখাইয়াছেন যে, এক কালে যে বৌদ্ধ নরপতিগণ পরের সেবার জন্য আপনার যথাসর্ব্বস্ব দান করিয়া ভিক্ষুক হইতেও কুণ্ঠিত হইতেন না, তিনি সেই শ্রেণীর বৌদ্ধ নৃপতিগণেরই অন্যতম। তিনি পরের কল্যাণ কামনায় সুদুর্লভ রাজশক্তি পরিত্যাগ করিতে মুহূর্ত্ত মাত্র ইতস্ততঃ করিলেন না। জাপান সম্রাট এখন প্রজাবৃন্দের হস্তে রাজদণ্ড সমর্পণ পূর্ব্বক তদ্বিনিময়ে প্রজার নিকট হইতে অনন্যসুলভ শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন। প্রজার শ্রদ্ধাভাজন হইয়া তিনি কেবল রাজমুকুট ও রাজ সিংহাসন লইয়াই সন্তুষ্ট আছেন।

 অদ্য উনচত্বারিংশৎবর্ষ মাত্র হইল, মেইজি অব্দ প্রবর্ত্তিত