পাতা:নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৭৬ নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন সুযোগে আমরা অনেক জিনিষ কিছু না কিছু করিয়া তুলিয়াছি । ১৯২৭ সনে এই দুই শক্তিকে বাদ দিলে আমরা কিছু বুঝিতে পারিব না । এই সঙ্গে আর একটা কথা মনে রাখা দরকার । স্বদেশী আন্দোলন হউক কি মহালড়াই হউক,—দুই ধাক্কাতেই আমরা কৃষি শিল্প বাণিজ্যে যা কিছু করিতে পারিয়াছি তার সঙ্গে ইংরেজ এবং বাঙালী ( ও ভারতবাসী ) উভয়ে জড়িত আছে। অর্থাৎ ইংরেজকে বয়কট করিয়া আমরা বড় হইতে পারি নাই। আমাদের আর্থিক জীবনের ধারা ইংরেজ-বাঙালীর, ইংরেজ-ভারতবাসীর মেলমেশে পরিপুষ্ট । যতই বয়কট করিতে চেষ্টা করি না কেন, শেষ পর্য্যন্ত দাড়াইতেছে এই ;– আজ ১৯২৭ সনে যে কয়জন করিৎকৰ্ম্ম ভারতবাসী দু’পয়সা করিয়া খাইতেছে তাদের কৰ্ম্মদক্ষতা, কৃতিত্ব, পটুত্ব, সব জিনিষ ইংরেজের ব্যবসা-বাণিজ্য কৃষি-সম্পদ ব্যাঙ্কের প্রসারের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত । শিল্প-বাণিজ্যের সঙ্গে সাক্ষাৎভাবে যোগাযোগ নাই এমন এক ভারতীয় কৰ্ম্মক্ষেত্রের একটা দৃষ্টান্ত দিতে পারি ; প্রেসিডেন্সি কলেজ সরকার-প্রতিষ্ঠিত কলেজ। এই জিনিষটার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যাসাগর কলেজ, রিপন কলেজ, সিটি কলেজ ইত্যাদি বিদ্যাপীঠ গড়িয়া উঠিয়াছে। কিন্তু এই সকল কলেজের প্রভাবে প্রেসিডেন্সি কলেজটার বেঞ্চগুল খালি হইয়া গিয়াছে কি ? হয় নাই । প্রেসিডেন্সি কলেজের সঙ্গে সঙ্গে এই সব কলেজ,—যাকে আপনার দ্বিতীয় শ্রেণীর বা তৃতীয় শ্রেণীর কলেজ বলিয়৷ থাকেন—চলিয়াছে। ঠিক সেইরূপই আমি বলিতেছি যে, স্বদেশী আন্দোলন অথবা মহালড়াইয়ের হিড়িকে যে কয়জন করিৎকৰ্ম্মা লোক আমাদের দেশে খাড়া হইয়াছে আর নতুন নতুন উপায়ে সম্পদ বৃদ্ধি করিতেছে তারা অনেকেই লয়েডস ব্যাঙ্ক বা নর্থ-বৃটিশ ইনশিওর্যান্স কোম্পানী বা অন্যান্ত বিদেশী কারবারের ছায়ায় আস্তে আস্তে বাড়িয়া উঠিয়াছে। এই হইতেছে প্রথম স্বীকাৰ্য্য।