পাতা:নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\)(` o নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন আশুতোযের সময়ে উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানসমূহে এবং সমাজ-জীবনের প্রধান প্রধান কেন্দ্রগুলায় বাংলা ভাষার প্রতি অসন্মান, এমন কি, ঘৃণ৷ দেখানে হইত। তাহার ছোটবড় সকল সহকৰ্ম্মীর মধ্যেই নিজেকে খাটো ভাবা-রূপ যে দুৰ্ব্বলতা ছিল, উহ। তাহারই অন্যতম প্রকাশ । দেশবাসার এই দুৰ্ব্বলতার জন্যও আশুতোষ তীব্র ব্যথা অমুভব করিতেন । সুতরাং, ধখন তিনি বাঙালী ধুতির আদর ও বাঙালী মস্তিষ্কজাবীর আত্মসন্মান বাড়াইবার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাভাষার ইজ্জত প্রচার করিতে থাকিলেন তখন তাহার মতলব ছিল বাঙালা জাতির শিরদাড়াকে শক্ত করিয়া তোলা, আর বাঙালার সাধনার জন্য আধুনিক বিখশক্তির কাছ হইতে আন্তর্জাতিক সমাদর টানিয়া আন । বাঙালীর মাতৃভাষাকে ংলাদেশের উচ্চতম শিক্ষার মর্য্যাদ-যুক্ত আসনে উন্নীত করিয়া তিনি এই দিকে প্রথম চাল চালিলেন । ইহাতে বিপ্লবটী সুরু করা হইয়াছিল মাত্র। কিন্তু বাংলাদেশের পণ্ডিত ও বৈজ্ঞানিকের সঙ্গে অদ্যান্ত দেশের পণ্ডিত ও বৈজ্ঞানিকদের সমানে সমানে পরস্পর সম্মানজনক সম্বন্ধ স্থাপিত করিতে হইলে, প্রত্যেক সহরে ও পল্লীকেন্দ্রে প্রত্যেক বিজ্ঞান ও বিদ্যার উচ্চতম শিক্ষা, গবেষণা ও গ্রন্থ-প্রকাশ যাহাতে বাংলাভাষার বাহনেই চলে তাহার ব্যবস্থা করা আবশুক ! ইহা একটা বিপ্লবসাধন সন্দেহ নাই । সেই বিপ্লবের পরিণতি এখনও আমাদের করায়ত্ত হয় নাই । যুবক বাংলা সম্বন্ধে আশুতোষের নানা আকাজক্ষার মধ্যে এইটাই বৰ্ত্তমানে আমাদের সব চেয়ে বেশী আকৃষ্ট করা উচিত । কেননা সেই আত্মিক বিপ্লবের এইরূপ পরিণতি না ঘটিলে আমাদের মস্তিষ্কের কার্য -ক্ষমতা বাড়িবে না, শিক্ষা-বিষয়ে আমাদের সময় ও শক্তির অপচয় নিবারিত হইবে না আর বাঙালীর জীবন ও চিন্তার ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের প্রসার বাড়িতে পারিবে না ।