পাতা:নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গ-সমাজের রূপান্তর ও নিরক্ষরের অধিকার ৩৮৭ কথা ভাবিতে হয়। গোট বাংলা দেশের কথা ছাড়িয় শুধু যদি একট। জেলার কথাও ভাবি তাহ হইলেও দেখি যে তাহার পাচ কিংবা ছয় কিংবা সাত লাখ নরনারার ভিতর অসংখ্য বৈচিত্র্য রহিয়াছে। এই অশেষ বৈচিত্রের ভিতর কোন লক্ষণটাকে বাঙ্গালী বলিব, কোন লোকের কীৰ্ত্তিকে বাঙ্গালার কান্তি বিবেচনা করিব, কোন চাষাকে বাঙ্গালী চাষী বিবেচনা করিব, কোন মিস্ত্রাকে বাঙ্গালী মিস্ত্রা বিবেচনা করিব, কোন মাঝিকে বাঙ্গাল মাঝি বিবেচনা করিব ? বাংল। দেশের সেবক, বঙ্গায় গণতন্ত্রের প্রবক্তক, বাঙ্গালী স্বরাজের প্রচারক ইত্যাদি রূপে যখন তামাদের স্বদেশসেবকগণ কৰ্ম্মক্ষেত্রে অবতীণ হয় তখন তাহার। এই পাচ ছয় সাত লক্ষ লোকের ভিতর কোন কোন অংশটাকে বাদ দিয়া কোন কোন অংশের সেবায় প্রবৃত্ত হইবেন ? চোখের সম্মুখে দেখিতেছি অসংখ্য ওলট পালট। অহিন্দু হিন্দু হইতেছে, অমুসলমান মুসলমান হইতেছে, অবাঙ্গালা বাঙ্গালা হইতেছে, অমুচ্চ উচ্চ হইতেছে । আর তাহ ছাড়। বিবাহের ফলে অথব| অন্ত কোনে কারণে রক্তের সঙ্গে অন্ত রক্ত আসিয়া মিশিতেছে। বাঙ্গালার হাড়মাসের ঠিকুজা কোনো একটা সোজ পথে চলিতেছে না। এই অবস্থায় কোনো বৈঠকখানার মজলিসে বসিয় বাঙ্গালা জাতির আর্থিক, রাষ্ট্রক আর সামাজিক পাতি দেওয়া চলিবে না। নয়। বাংলার জন্য যে ধরণের মুসাবিদ কর আবগুক তাহার ব্যবস্থা করিতে হইলে রাজবংশকে রাজবংশ, সাওতালকে সাওতাল, মাহিষ্ণুকে মাহিষ, ডোমকে ডোম, মুসলমানকে মুসলমান, এবং হিন্দুকে হিন্দু—এই সকল শ্রেণীর নরনারাগুলির নাক গুণিয় প্রত্যেকের অভাব-অভিযোগ, প্রত্যেকের আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যেকের আত্মকর্তৃত্ব, প্রত্যেকের স্বাধীনতা সম্বন্ধে সজাগ ভাবে কাৰ্য্যে নামিতে হইবে।