পাতা:নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্ম-প্রতিষ্ঠার সমাজশাস্ত্র 8్ఫరి তাহারও ঠিক-ঠিকানা নাই। আরামবাগের একজন নীচ জাতের লো বদ্ধমানে যাইয়া একটা বাড়ী করিয়া জাকাইয়া বসিল । ক্রমে স্থানীয় লোকের সঙ্গে তাহার ভাব হইল ও তাহাদের সঙ্গে তাহার আসা-যাওয় চলিতে লাগিল। ক্রমে দু এক জন কায়স্থের বাড়ীতে সে হুক পাইল সে হয়তো স্থানীয় কায়স্থদের কয়েকজনকে নিমন্ত্রণ করিল—তাহার তাহার বাড়ীতে আসিয়া খাইয়া গেল। পরে একদিন সে কোনো কায়স্থের বাড়ীতে নিজের মেয়ের বিবাহ দিল। ব্যস্, সে জাতে উঠিয়া গেল । আমরা যাহাকে মধ্যবিত্ত শ্রেণী বলি তাহার মধ্যেও কতটা ওঠানাম চলে সেটাও ভাবিবার কথা। ১৮৫০ সনে যাহারা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ছিল, তাহাদিগকে ক, খ, গ এই তিন ভাগে বিভক্ত করা যাউক । ১৯৫০ সনে যাহারা মধ্যবিত্ত হইবে তাহাদিগকেও ক, খ, গ এই তিন ভাগে ভাগ করা গেল । ১৮৫০ সনের “ক” স্তরের লোককে যদি ১৯৫০ সনের ঐ স্তরের লোকের সঙ্গে তুলনা করা যায়, তাহা হইলে দেখিব যে, অনেক নতুন বংশের লোক “ক”শ্রেণীতে ঢুকিয়াছে—যাহারা আগে “ক” শ্রেণীতে মোটেই ছিল না ; আবার যাহারা “ক” শ্রেণীর অন্তর্গত ছিল তাহাদের বংশের লোকেরা হয়তো “ক” শ্রেণী ছাড়িয়া “খ” শ্রেণীতে আসিয়া পড়িয়ছে। দেশের মধ্যে সৰ্ব্বত্র “আভ্যন্তরীণ উপনিবেশ” স্থাপন চলিতেছে। এই দিকটাতেও লক্ষ্য থাকা দরকার। যেমন যুদ্ধের হিড়িকে এক জায়গার লোক আর এক জায়গায় সরিতে বাধ্য হয়, তেমনই পেটের তাড়নায়ও এক জায়গার লোক অন্যত্র চলিয়া যাইতে বাধ্য হয়। প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবেও—যেমন নদীতে ভাঙন-ধরার জন্য—লোকে বসবাসের স্থান পরিবর্তন করে। সারা বাংলাটায় এই শ্রেণীর আভ্যন্তরীণ উপনিবেশ স্থাপন কোথায় কি রকম চলিতেছে, সেটা আলোচনা করিবার যোগ্য ।