পাতা:নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(2 e নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন তথ-কথিত ইতর জাত ক্ষেপিয়া উঠিতেছে। যেখানে যোনি-গত, পারিবারিক, ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রক, আর্থিক বা অন্ত কোনো বিরোধ আসল কথা, —সেখানে জোর জবরদস্তি করিয়া আমরা ধৰ্ম্মকলহ বা জাতিকলহ চাগাইয়। তুলিতে শিখিয়াছি । মানুষের স্বাভাবিক চিত্ত-প্রবৃত্তিগুলার ইজ্জত স্বাকার করিতে হতস্ততঃ করা আমাদের জন-নায়কের খেয়াল দাড়াইয়াছে । এই অবস্থায় নৃতত্ত্বে প্রতিষ্ঠিত আধ্যাত্মিক বিপ্লবের ফলে বাঙালার মতিগতি সুপথে চলিতে সুরু করিবে বলিয়। বিশ্বাস করি । “আর্থিক উন্নতি” পত্রিকায় “আদ্যের গন্তারা” নামক বাঙালা সমাজের ইতিহাস বিষয়ক ও স্থপ্রণেতা শ্রযুক্ত হরিদাস পালিত বক্তমান বাঙলার নান। জেলার বিভিন্ন জাতের সাংসারিক ওঠানামার বৃত্তান্ত প্রকাশ করিতেছেন। চব্বিশ পরগণা, বদ্ধমান, মালদহ হত্যাদি জেলায় বামুন কায়েৎ বৈদ্য জাত নামিতেছে । অপর-দিকে তথাকথিত ছোট জাত আর্থিক হিসাবে উঠিতেছে । এমন কি “অ-বাঙালী” সাওতালরাহ অনেক ক্ষেত্রে ভবিষ্ণু-বাংলার চাষা-মিস্ত্রা কারিগররূপে দাড়াহয় যাহতেছে । নৃ-তত্ত্ব বিদ্যার আলোচনা সুরু করিলে বাঙালা সমাজের এই ওলটপালট দেখিয়। স্বদেশ-সেবকগণ নতুন নতুন কত্তব্য ঠাওরাইতে পারবেন। তাহা ছাড়া প্রাচীন ভারতের জাতি-সংমিশ্রণ, রক্ত-সংমিশ্রণ, রাতিনাতি-সংমিশ্রণ ইত্যাদি তথ্যও যুবক বাঙলার কন্ডার ভিতর আসিয়া পড়িবে। তাহার ফলে ভারতীয় ইতিহাসের ধারা সম্বন্ধে আর ভারতীয় হিন্দু-মুসলমানের হাড়মাস সম্বন্ধে আজকালকার বুজরুকিপূর্ণ অলীকতাময় কুসংস্কারগুলি একে একে নষ্ট হইতে থাকিবে । আমাদের বেদ-জাতকপুরাণ-তন্ত্রের কাহিনী সমূহের ব্যাখ্যায় নব-যুগের নবনূর পড়িতে পারিবে । “পরিবার, গোষ্ঠী ও রাষ্ট্র” নামক গ্রন্থে নৃ-তত্ত্বের এইরূপ ব্যবহারিক প্রভাব সম্বন্ধে যৎকিঞ্চিৎ আলোচনা করিয়াছি ।