পাতা:নরওয়ে ভ্রমণ.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নরওয়ে ভ্রমণ।

 কএক বৎসর অতীত হইল আমি কোন বিশেষ কর্ত্তব্যের অনুরোধ গ্রীষ্মকালে ইংলণ্ডে গিয়াছিলাম। তখন লণ্ডনে অনেকের মুখেই শুনিতাম যে, “এত দূর আসিয়া নওয়ের মত রম্য স্থানটী না দেখিয়া দেশে ফিরিয়া যাওয়া বড়ই আপসোষের বিষয়,” কিন্তু সে সময় বন্ধুজনের এ সকল কথায় কর্ণপাত না করিয়া শীতের পূর্ব্বেই দেশে ফরিয়া আসিতে বাধ্য হইয়াছিলাম।

 ইহার বৎসর দুই পরে আবার ইংলণ্ডে যাইতে মানস করলাম। এবার কিন্তু নরওয়ে দেখাই আমার এত দূর দেশে যাওয়ার মূখ্য উদ্দেশ্য। অনেকে বলিতে পারেন যে, স্বদেশে এত দেখিবার স্থান থাকিতে বিদেশ, বিশেষতঃ সাত সমুদ্র তের নদীর পারে যাওয়ার অবশ্যকতা কি? কথাটা খুবই সত্য এবং স্বদেশের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি দেখিবার আগে আমাদের মনে এই বিদেশ ভ্রমণের ইচছাটা যে বড়ই অস্বাভাবিক এবং লজ্জাকর তাহাতে আর সন্দেহ কি? তবে কথাটা তলাইয়া দেখিলে অনেকেই হয়ত বুঝতে পারিবেন যে, আমাদের দেশে আজও স্ত্রীলোকের পক্ষে, সকল জায়গায় যাতায়াত তত সহজ ও সুবিধাজনক হয় নাই। অনেক স্থলে ত এক রকম অসম্ভব বলিয়াই মনে হয়। এজন্য ইচ্ছা সত্ত্বেও অনেকের কোথাও যাওয়া ঘটে না। কিন্তু য়ুরোপের প্রায় সকল স্থানেই সকল রকম যাত্রীদের সুখ ও সুবিধার জন্য বেশ সুবন্দোবস্ত রহিয়াছে। এমন কি একজন প্রাপ্তবয়স্কা রমণীও নির্ভয়ে একাকিনী দূরদেশে যাতায়াত করিতে পারেন, তাহাতে তাঁহার কোনরূপ অবমানিত বা লাঞ্ছিত হওয়ার কোনই আশঙ্কা নাই। এই সব কারণেই নানা দিক চিন্তা করিয়া স্বদেশ ভ্রমণের ইচ্ছা আপাততঃ স্থগিত রাখতে বাধ্য হইয়াছিলাম। মনে মনে কিন্তু ভাবতাম যে, একটা সখের খাতিরে এত অর্থ ব্যয় করা সঙ্গত কি না!