এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা পৌরাণিক আখ্যায়িকাগুলি শুদ্ধ কল্পিত-গল্পসর্বস্ব নয়, প্রত্যেকটীর উদ্ভাবনী গভীর গবেষণামূলক, প্রত্যেকটীর ভিত্তি দুজ্ঞেয় অধ্যাত্মতত্ত্বে দৃঢ়, প্রত্যেক জীবনীর প্রতি ছত্র পরমার্থবিজ্ঞানে মাখামাখি । গল্পের আড়ম্বরপূর্ণ আবরণ সরাইয়া প্রকৃত তথ্যের বিকাশ করা, স্কুলের অবলম্বনে অতি সুহ্মের সমীপস্থ হওয়া, দুগ্ধ হইতে নবনীসংগ্রহের ন্যায় জটিলতার জলীয় অংশ চুকিয়া ভূতপূৰ্ব্ব মনীষিগণের পরম উদ্দেশ্য আবিষ্কার করিয়া দেওয়াই পৌরাণিক চরিত্র প্রকাশের প্রকৃত কৃতিত্ব, নতুবা যে গল্প—সেই গল্প। বিচিত্র এই নাটকের নায়ক নরকাসুরের জীবনী। তাহার জন্ম সত্যে হিরণ্যাক্ষঅপহৃত রসাতলবাসিনী পৃথিবীর গর্ভে-বরাহরূপী শ্ৰীভগবানের ভূভারহারিক অবতারমূৰ্ত্তির ঔরসে-লালসায় মোহময় সঙ্গমে, কৰ্ম্ম-অবাধ স্বেচ্ছাচার, মৃত্যু-দ্বীপরে সত্যভামা দেহ-ধারিণী নিজ জননীর আগ্রহে, শ্ৰীকৃষ্ণমূৰ্ত্তিধারী স্বীয় জন্মদাতার অস্ত্ৰপ্ৰহারে। ইহাই পৌরাণিক গল্পভাগ-চমৎকার। ইহার সারভাগ সম্ভব এই,-নরকের উৎপত্তি-পৃথিবীর আসক্তিতে, অবস্থিতিদুৰ্জয় অভিমানের আসুরিকতায়, লয়-বসুন্ধরার আত্মসংযম জনিত অদ্ভুত পরিবর্তনে সত্যরূপ পুনঃপ্রাপ্তিতে—শ্ৰীভগবানের সু-দর্শনে। আমি এ বিবরণীতে যথাসাধ্য এই মতেরই পোষকতা করিয়াছি। প্রকাশার্থে স্বৰ্গকে নরকের খুব পাশাপাশি ধরিয়াছি, নির্বািণকেও রাখিয়াছি উভয়ের মধ্যস্থলে--উভয়কে ধরিয়া অথবা ছাড়িয়া । ভূমিকার ক্ষমতা এই পৰ্য্যন্ত,--আর অগ্রসর হওয়া বাতুলের প্রলাপ, এইবার দেখিয়া লাইবার ভার পাঠক-পাঠিকার। তবে আমি দায়ী নই, আমার চেষ্টা তো করিয়াছি সৎ কিছু বুঝাইবার। আর কি ? রায়ণ, বৰ্দ্ধমান } গ্রন্থকার ফুল-দোল, সন ১৩৩১ সাল