পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

হইতে বলিলেন, “মৃগেলটা ছাড়িয়া দে।” জেলেরা মৃগেলটা ছাড়িয়া দিয়া রোহিৎমৎস্যটি ডিঙ্গির খোলে ফেলিল, তাহার পর জাল গুটাইয়া তীরে আসিল।

 নবীনচন্দ্র গৃহাভিমুখগামী হইলেন। এক জন ধীবর মৎস্যটির কণ্ঠাস্থিতলে অঙ্গুলি প্রবিষ্ট করাইয়া ঝুলাইয়া লইয়া তাঁহার পশ্চাৎগামী হইল। গৃহে আসিয়া নবীনচন্দ্র চণ্ডীমণ্ডপের পশ্চিমদিকস্থ কক্ষ অতিক্রম করিয়া অন্তঃপুরে আসিয়া ডাকিলেন,—“দিদি!”

 অন্তঃপুরে পূর্ব্বে ও পশ্চিমে তিনটি করিয়া ছয়টি প্রকোষ্ঠ; পূর্ব্বের অংশ দ্বিতল; পশ্চিমাংশে দ্বিতলে একটিমাত্র প্রকোষ্ঠ—ঠাকুরঘর; উত্তরে পাকশালা ও ভাণ্ডার। নবীনচন্দ্রের কণ্ঠস্বর শুনিয়া পাকশালা হইতে এক জন বিধবা রমণী বাহিরে আসিলেন। তাঁহাকে দেখিলে বয়স পঞ্চাশের অধিক বলিয়া বোধ হয় না। সংযমে ও পূতাচারে হিন্দুবিধবার স্বাস্থ্য সহজে ক্ষুণ্ণ হয় না। তিনি মৎস্য দেখিয়া বিশেষ সন্তোষ প্রকাশ করিলেন, ডাকিলেন, “বড় বৌ, বাহিরে আইস।” বড়বধূও মৎস্য দেখিয়া প্রশংসা করিলেন। কমল ও শ্যামের মা পূর্ব্বেই আসিয়াছিল। কমল ভাণ্ডার হইতে ডালায় চিঁড়া ও মুড়কী এবং সরায় তৈল আনিয়াছিল। ধীবর বসনের একাংশে চিঁড়া মুড়কী বন্ধন করিল,—তৈলের সরা লইয়া চলিয়া গেল। শ্যামের মা ‘আঁইস’বঁটী ও ছাই লইয়া প্রাঙ্গনে মাছ কুটিতে বসিল।

 নবীনচন্দ্র বহির্ব্বাটীতে আসিয়া চণ্ডীমণ্ডপে তক্তপোষের উপর বিছানায় বসিলেন। পার্শ্ববর্তী প্রকোষ্ঠের বিছানা ভ্রাতুষ্পুত্ত্রের