পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ।

যুবতী।

পরীক্ষা দিয়া কয় দিন পরেই প্রভাত গৃহে গেল।

 শোভার শ্বশুরালয় হইতে তাহাকে লইয়া যাইবার প্রস্তাব হইল। কৃষ্ণনাথের পত্নী স্বামীকে বলিলেন, “পাঠাইতে হইবে।” কিন্তু শোভা এবারও পূর্ব্ববারের মত ক্রন্দন বাহির করিল। যৌবনের অতৃপ্ত কামনা যে তাহাকে স্বামীর প্রতি আকৃষ্ট করিতেছিল না, এমন নহে। কিন্তু বিবাহের পর এই এক বৎসর সে পরিচিত পিতৃগৃহেই স্বামীকে পাইয়াছে; স্বামিলাভের জন্য পরিচিত জীবনের সঙ্গে আপনার বিচ্ছেদ সম্পূর্ণ করিবার আবশ্যক হয় নাই। ভ্রাতৃবধূদিগের মধ্যে চপলার সহিত তাহার অধিক সৌহার্দ্য। চপলা অনেক সময় পিতৃগৃহে কাটাইত। তাহার কারণ পূর্ব্বে বলিয়াছি। শোভা ভাবিত, চপলাই সুখী। এবার শোভাকে শ্বশুরালয়ে লইয়া যাইবার প্রস্তাব হইয়াছে শুনিয়াই চপলা তাহার নিকট আসিল। শোভা আলুলায়িতকুন্তলে বাতায়নে দাঁড়াইয়া কি দেখিতেছিল। চপলা পশ্চাৎ হইতে তাহার চুল ধরিয়া টানিল। “উহু—হু—” করিয়া শোভা ফিরিল। বয়স্যাদিগের সহিত ব্যবহারে চপলার চাঞ্চল্য অনেক সময় এইরূপ শারীরিক পীড়নে আত্মপ্রকাশ করিত। তাহার চিমটি, ঘাড়ে পড়া, চুল ধরিয়া টানা—এই সকল ভালবাসার অত্যাচারে সমবয়সী শোভা অভ্যস্ত হইয়া উঠিয়াছিল। চপলা জিজ্ঞাসা করিল, “কি, ঠাকুরঝি, এবার নাকি শ্বশুরবাড়ী ঘর করিতে যাইতেছ?”

১১১