কমল ফিরিয়া আসিয়া বসিল। সতীশচন্দ্র পুত্ত্রের সহিত খেলা করিতেছিল। সেও বসিল। কমল জিজ্ঞাসা করিল, “আসন পাতিয়া দিব?”
সতীশ বলিল, “না।”
তাহার পর স্বামী স্ত্রীতে কত কথা হইতে লাগিল। সে সব কথা সাংসারিক হিসাবে অনাবশ্যক; কিন্তু প্রেমের হিসাবে অত্যাবশক। তাহার মধ্যে কত বিদ্রূপ, কত রহস্য—তাহাতে কত আনন্দ,—কত সুখ!
দেখিতে দেখিতে সময় কাটিয়া গেল। মা ঘাট হইতে ফিরিয়া আসিলেন। শাশুড়ীর পদধ্বনি শুনিয়াই কমল কক্ষান্তরে যাইতেছিল। মা বলিলেন, “বৌমা, সতীশকে খাবার দাও।”
সতীশ জননীকে বলিল, “মা, এ বাদলায় না হয় ঘাটে না-ই যাইতে?”
মা বলিলেন, “সতীশ, বৌমা কিন্তু যাইতে চাহিতেছিল। দুষ্ট মেয়ে কিছুতেই সাবধান থাকিতে চাহে না। শরীর ত সুস্থ হইতেছে না। আবার আজ কয় দিন হইতে কাশি হইয়াছে। তুই কল্যই একবার ডাক্তারকে আনা।”
সতীশ বলিল, “আচ্ছা।”
সতীশ আহার করিয়া যাইলে কমল শাশুড়ীর সহিত খুব ঝগড়া করিল,—“কেন, আমার কি হইয়াছে?”
মা বলিলেন, “মা, শরীর যে শোধরাইতেছে না।”
কমল বলিল, “মা, তোমার বৃথা ভয়।”
১৩৩