তাঁহার গৃহে থাকিতে বলেন, গৃহিণী তখন তাহার প্রতিবাদ করিয়াছিলেন। তিনি জানিতেন, কন্যা কখনও নিকটে থাকে না; এখন হইতে তাহাকে শ্বশুরালয়ে প্রেরণ করাই কর্তব্য। কিন্তু এবার কন্যা ‘ঘর করিতে’ যাইবে; শ্বশুরালয়ে বাস করিতে যাইবে,—তাই মাতৃহৃদয়ে বিচ্ছেদের আশঙ্কা কর্তব্যবুদ্ধিকে নিষ্প্রভ করিতে লাগিল। বিশেষ প্রসবের অল্পদিন পরে কন্যা শ্বশুরালয়ে যাইবে,—এখনও তাহার শরীর দুর্ব্বল। তিনি ভুলিয়া যাইলেন, সে কেবল তাঁহারই কন্যা নহে, পরন্তু সেই দূর পল্লীভবনেও দুই জন রমণী তাঁহার সেই কন্যার জন্য হৃদয়ের সঞ্চিত স্নেহ লইয়া অপেক্ষা করিতেছেন,— তাহারা তাহাকেই সৌন্দর্য্য, নয়নের আনন্দ ও হৃদয়ের তৃপ্তি করিতে প্রয়াসী; ভুলিলেন, শিবচন্দ্র শিশু পৌত্ত্রের দর্শন জন্য ব্যগ্র; বুঝিলেন না, স্নেহশীল নবীনচন্দ্রের হৃদয়ে আর বিলম্ব সহিতেছে না।
গৃহিণীর এই ভাবই কৃষ্ণনাথের পক্ষে যথেষ্ট হইল। কন্যাকে শ্বশুরালয়ে না পাঠাইবার সম্বন্ধে তিনি কখনও গৃহিণীর সহানুভূতি প্রাপ্ত হয়েন নাই; সুতরাং তাঁহার এই অস্থিরতাই যথেষ্ট বিবেচনা করিয়া শিবচন্দ্রকে লিখিলেন, প্রসূতিকে এত অল্প দিনে স্থানান্তরিত করা কর্ত্তব্য নহে। বিশেষ শরৎকালে পল্লীগ্রাম স্বাস্থ্যকর নহে। এই দুই কারণে চিকিৎসকগণ এখন শোভাকে পাঠাইতে নিষেধ করিতেছেন। তিনি প্রভাতকেও তাহাই বুঝাইলেন। শোভার ও শিশুর শরীর অসুস্থ হইবার আশঙ্কায় প্রভাতও মনে করিল, এখন না
১৪৩