জমিয়াছে। ছাত্রাবাসের ছেলেদের সহায়তায় কোনরূপে ঘর পরিষ্কৃত হইল। তাহারা প্রায় সকলেই ধূল গ্রামের নিকটবর্ত্তী গ্রামসমূহের অধিবাসী; নবীনচন্দ্রকে জানিত, এবং তাঁহার স্বভাবগুণে তাঁহাকে ভালবাসিত ও ভক্তি করিত। বিশেষ পল্লীগ্রামে অন্য সম্বন্ধ না থাকিলেও পরিবারে পরিবারে গ্রাম্য সম্বন্ধ আছে। সে সম্বন্ধে জাতিবিচার নাই,— তাহা মনুষ্যসমাজের প্রশস্ত ভিত্তির উপর সংস্থাপিত। সে সম্বন্ধে নবীনচন্দ্র ছেলেদের কাহারও কাকা, কাহারও জেঠা মহাশয়, কাহারও মামা ইত্যাদি। যাহাদের সহিত সেরূপ কোনও সম্বন্ধ ছিল না, তাহারও অন্য ছেলেদের সঙ্গে মিশিয়া গেল। সংসারসংঘাতে মানুষ স্বার্থপর হইবার পূর্ব্বে, তাহার হৃদয়ের উদারতা সঙ্কীর্ণতায় সীমাবদ্ধ হইবার পূর্ব্বে, মানুষের আদর্শ অতি সমুন্নত থাকে; ক্রমে তাহার অবনতি ঘটে। তাই যুবকদিগের মধ্যে সহজে বন্ধুত্ব জন্মে; তাহারা সহজে স্বার্থত্যাগ করিতে পারে; মহৎ অনুষ্ঠানে তাহারাই সর্ব্বাগ্রে অগ্রসর হইতে সমর্থ; তাহাদিগকে ছাড়িয়া কোনও মহৎ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হইতে পারে না। আবার নবীনচন্দ্রের মত স্নেহশীল ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সহজে, যেন আপনা হইতেই হইয়া যায়। কাযেই ছেলেরা তাঁহাকে পাইয়া যেন স্বজনসমাগমের আনন্দলাভ করিল।
সে যে শ্বশুরালয়ে স্থায়ী হইয়াছে, নবীনচন্দ্র তাহা জানিতে পারিয়াছেন,—এই লজ্জায় প্রভাত তাঁহার নিকট মুখ তুলিতে পারিতেছিল না; এবং এখন কি করিবে, এই চিন্তায় বিব্রত
১৪৬