পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

তাপ লইয়া সতীশ দেখিল, জ্বর খুব প্রবল হইয়াছে। ধীরে ধীরে কমলের নয়নপল্লব নিদ্রায় মুদিত হইয়া গেল। সতীশ কিছুক্ষণ বসিয়া থাকিবার পর উঠিল: অতি ধীরপদে বাহির হইয়া গেল— পাছে কমলের নিদ্রাভঙ্গ হয়। মা দালানে ছিলেন; অমল তাঁহার কাছে গল্প শুনিতেছিল। সতীশ বলিল, “মা, জ্বর খুব প্রবল।”

 মা বলিলেন, “আমি যাইয়া বসিতেছি। তুই একটু বিশ্রাম করিতে যা।”

 সতীশ পুত্ত্রকে বলিল, “অমল বাবু, চল, আমরা বাহিরে যাই।”

 অমল বাবু সে বিষয়ে বিশেষ ব্যগ্রতা জানাইলেন না। সতীশচন্দ্র বলিল, “ছবি দেখাইব।” তখন অমলবাবুর আপত্তি দূর হইল। পুত্ত্রকে লইয়া সতীশ বাহির-বাটীতে গেল! মা যাইয়া জ্বরকাতরা বধূর শিয়রে বসিলেন।

 কলিকাতা হইতে ফিরিয়া ঔষধ, পথ্য ও নিয়মের বাঁধাবাঁধিতে কমল কয় মাস ভাল ছিল। ক্রমে শাশুড়ীর ও সতীশের সহস্র চেষ্টা সত্বেও নিয়মের বাঁধাবাঁধির হ্রাস হইতে লাগিল। প্রথমে যেরূপ বাঁধাবাঁধি থাকে,ক্রমে তাহার হ্রাস হইয়াই থাকে। এ দিকে হেমন্তঅন্তে শীত আসিল। কমল শরীরে দুর্ব্বলতা অনুভব করিতে লাগিল। কিন্তু তাহার সামান্য অসুখে সকলে অত্যন্ত ব্যস্ত হইতেন বলিয়া সে সে কথা প্রকাশ করিল না। বৈশাখের প্রথমে সেই দুর্ব্বলতা আর সতীশচন্দ্রের শঙ্কাতীক্ষ্ণ দৃষ্টি অতিক্রম করিতে পারিল না। সতীশ বলিল, “কমল, নিশ্চয় তোমার অসুখ করিয়াছে।” কমল কিছুতেই সে কথা স্বীকার করিল না।

১৬৮