পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

বিকাশ সূচিত হইল। হৃদয়ের অতি দারুণ ভার কিছু লঘু হইল। শিবচন্দ্রের ও নবীনচন্দ্রের মুখে আশঙ্কার অতি নিবিড় ছায়া সরিতে লাগিল।

 প্রভাত পূর্ব্বে এক পক্ষকালের ছুটী লইয়াছিল; শেষে আরও এক পক্ষের জন্য ছুটীর দরখাস্ত পেশ করিয়া সে ওয়ালটেয়ারে আসিয়াছিল। নূতন দেশ দেখিয়া তাহার বহু দিন নগরদৃশ্যে অত্যন্ত ক্লান্ত নয়ন তৃপ্ত হইল। সে সমুদ্রগর্ভ হইতে সূর্য্যোদয় দেখিবার জন্য অতি প্রত্যূষে উঠিত; ‘অপেরাগ্লাস’ লইয়া বালুকাস্তূপের উপর দাঁড়াইয়া অসাধারণ ধৈর্য্যসহকারে সূর্য্য-বিকাশের অপেক্ষা করিত। যে দিন পূর্ব্ব-দিক্‌চক্রবালে মেঘ থাকিত— জলের মধ্য হইতে গোলক প্রকাশ দেখা যাইত না, সে দিন কি হতাশা! আর যে দিন তাহা দেখা যাইত, সে দিন কি আনন্দ! কিন্তু আনন্দের বিপদ, সে দৃশ্য বর্ণনাতীত! তাই শোভাকে পত্র লিখিবার সময় সে কিছুতেই ঠিক বুঝাইতে পারিত না। শোভা তাহা বুঝিবার জন্য বিশেষ ব্যস্ত হউক আর না-ই হউক—আপনার আনন্দের অংশ তাহাকে দিবার জন্য প্রভাত সর্ব্বদাই ব্যস্ত থাকিত।

 প্রভাত এই নূতন স্থানে কত নূতন জিনিস দেখিত, আর দীর্ঘ পত্রে শোভাকে সে সকলের বিষয় লিখিত। যুবক যখন প্রেমবিহ্বলতায় পত্নীকে আপনার আনন্দের অংশ দিতে ব্যগ্র হয়, তখন কি সে কল্পনা করিতে পারে, তাহা হয় ত পত্নীর পক্ষে প্রীতিপ্রদ নাও হইতে পারে? প্রভাত কি ভাবিতে পারিত, এই সব অতি

১৮৫