পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

চিত্রের মত দেখাইতেছে। সারি সারি ঝাউ যেন আকাশদৃশ্য বিভক্ত করিয়া দণ্ডায়মান।দুই পার্শ্বে নীলাম্বরের কোলে বৃক্ষলতায় যেন অবিচ্ছিন্ন সবুজ রেখা।

 বন্ধুদিগের সহায়তায় অল্প সময়ে মধ্যেই কিছু আহার্য্য প্রস্তুত হইল। প্রাতরাশের পর শারদানাথ ছুরিকার সাহায্যে উদ্ভিদ্‌বিদ্যার আলোচনা করিতে লাগিল; বিজয়চন্দ্র ও রাজেন্দ্রনাথ পাকের তত্ত্বাবধান করিতে লাগিল; এক দল তাস খেলিতে প্রবৃত্ত হইল; সঙ্গীতপ্রিয়গণ সঙ্গীত চর্চ্চা করিতে লাগিল; সকলেই অবসরমত পরচর্চায় যোগ দিতে লাগিল। রাজনীতি, সমাজনীতি, সাহিত্য—সবই আলোচিত হইতে লাগিল। বিশেষ, বঙ্গ ভাষায় নব প্রকাশিত ঐতিহাসিক গ্রন্থ, উপন্যাস ও কবিতা— এ তিনের যথেষ্ট সমালোচনা চলিতে লাগিল।

 এক জনের মনে পড়িল,শ্যামসুন্দরের ও মদনমোহনের মন্দির ও বিগ্রহ দেখিতে হইবে। চাঞ্চল্য ও আবেগ যৌবনের ধর্ম্ম। কথা হইতে না হইতে সঙ্কল্প স্থির হইল। তখন সকলে যাত্রা করিল। পথে রাজেন্দ্রনাথ পূর্ব্বপরিচিত “দেওয়ানজী” মহাশয়কে ডাকাইয়া লইল। “দেওয়ানজী” বৃদ্ধ,—মুণ্ডিতগুম্ফশ্মশ্রু,—দীর্ঘকায়,—কৃষ্ণবর্ণ। তিনি যাঁহাদের দেওয়ান ছিলেন, তাঁহাদের ঐশ্বর্য্য অতীতের প্রবাহে বিলীন হইয়া গিয়াছে। তবে তখন লোকের ঐশ্বর্য্য থাকিলে তাহার কিছু স্থায়ী চিহ্নও থাকিত; সেগুলি বিক্রীত হইবার নহে—তাই থাকিয়া যাইত। বঙ্গের সর্বত্র দেখিবে, বিস্তৃত দীর্ঘিকা, প্রশস্ত রাজপথ সুগঠিত

২৬৩