পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

কত তরণী ভাসিয়া যাইতেছে। বাষ্পীয় জলযানের গমনে জলরাশি আন্দোলিত হইতেছে,—বড় বড় ঢেউ আসিয়া কূলে প্রতিহত হইতেছে। কত ছোট ছোট নৌকা যাইতেছে; মাঝিরা গল্প করিতেছে, ধূমপান করিতেছে, ক্ষিপ্রহস্তে দাঁড় বাহিতেছে। সকলে স্নান করিতে গঙ্গায় নামিল। যাহারা সন্তরণপটু, তাহারা সন্তরণরত হইল; হস্তের আন্দোলনে জল ছিটাইতে লাগিল। কেহ কেহ ইচ্ছা করিয়া সঙ্গীদিগের মুখে জল দিতে লাগিল। ক্রমে জল ছিটানটা সংক্রামক রোগের মত ব্যাপ্ত হইয়া পড়িল। কলিকাতায় সচরাচর অবগাহন-স্নান ঘটে না; আজ সকলে তাহার অনির্ব্বচনীয় আনন্দ উপভোগ করিতে লাগিল।

 অপরাহ্নে—তিনটার পর- আহার্য্য প্রস্তুত হইল। আহারের আয়োজন যেমন বিপুল, ক্ষুধাও তেমনই প্রবল। কাযেই প্রচুর আহার্য্যের যথেষ্ট সদ্ব্যবহার হইয়া গেল।

 প্রত্যাবর্ত্তনকালে ক্ষেত্রমোহনের দোষে পথ ভুলিয়া,—গোশকটচালক ও যাত্রীদিগের নিকট পথের সন্ধান জানিয়া সকলে পথে কলহাস্য ছড়াইতে ছড়াইতে ষ্টেশনে আসিল। ষ্টেশনে সকলেই সোডা, লেমনেড বা জিঞ্জারেড পান করিবে, কিন্তু বিক্রেতাকে এককালে দুইটি আনিতে বলিবে না! সে বিরক্ত হইতে লাগিল; যুবকদল তাহাতে যথেষ্ট আনন্দ উপভোগ করিতে লাগিল।

 তাহার পর ট্রেণে আবার কলরব করিতে করিতে সকলে ফিরিয়া আসিল। তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হয় হয়।

২৬৫