নবীনচন্দ্র কলিকাতার পথে গৃহে প্রত্যাবর্ত্তন করিলেন। কৃষ্ণনাথ সকল কথা শুনিলেন, এবং দ্বিগুণ আগ্রহে প্রভাতের সহিত কন্যার বিবাহের প্রস্তাব করিলেন। প্রভাত আসিয়া খুল্লতাতকে ট্রেণে তুলিয়া দিয়া গেল।
নবীনচন্দ্র যখন গৃহে উপনীত হইলেন, তখন শিবচন্দ্র কোনও প্রতিবেশীর গৃহে একটা সামাজিক কার্য্যের জন্য ফর্দ্দ করিতেছিলেন। নবীনচন্দ্র অন্তঃপুরের দ্বার হইতে দিদিকে ডাকিয়া প্রবেশ করিলেন। পিসীমা ও বড়বধূঠাকুরাণী তাঁহার কুশল প্রশ্ন করিলেন। প্রভাতের কুশলবার্ত্তা ও কাশীর সংবাদের পর প্রভাতের বিবাহ-সম্বন্ধের কথা উঠিল। নবীনচন্দ্রের মুখে কৃষ্ণনাথের প্রশংসা আর ধরে না। তিনি বলিলেন,—কৃষ্ণনাথ মুখ্য কুলীন, স্পৃহনীয় ঘর, বিশেষ ধনবান, অতি অমায়িক, তিনি যে কয় দিন কলিকাতায় ছিলেন, প্রত্যহ তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিতেন; মেয়েটি ‘পরমাসুন্দরী’— ইত্যাদি ইত্যাদি।
পিসীমা জিজ্ঞাসা করিলেন, “প্রভাতের মন জানিলি?”
নবীনচন্দ্র উত্তর করিলেন, “দাদাকে বলিও না, তিনি শুনিলে রাগ করিবেন: এই সম্বন্ধেই ছেলের মত।”
“শিব কি মত দিবে?”
“তোমাকে আর আমাকে তাঁহার মত করাইতে হইবে। ছেলের অমতে কায করা হইবে না।তাহার সুখের অপেক্ষা কি আর কিছু বড়?”
বড়বধূঠাকুরাণীর মুখ গম্ভীর হইল।
৬৩