পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

তরুণ প্রেমের মধুরস্পর্শে হৃদয়ের কুসুমকানন বিকশিত। তখন অন্তরে বাহিরে কেবল প্রিয়তমা! তাই তরুণ যৌবনে— প্রেমাবেশে অতি নীরস হৃদয়েও রসসঞ্চার হয়—অতি অ-কবিও কবিতার রচনা করিতে পারে। কারণ, তখন সে হৃদয়ে সত্য সত্যই কবিতা অনুভব করে। হায়, সে সুখের যৌবন!

 নবপরিণীত যুবক প্রভাতচন্দ্রের তাহাই হইয়াছিল। তাই গৃহে তাহার আর পূর্ব্বের মত আকর্ষণ ছিল না। সে পত্নীর চিন্তায় বিভোর ছিল; পত্নীর পত্রের আশায় পথ চাহিয়া থাকিত। এই সময় শিবচন্দ্রের নিকট কৃষ্ণনাথের পত্র আসিল। কৃষ্ণনাথ জামাতাকে নিমন্ত্রণ করিয়া শিবচন্দ্রকে তাহাকে পাঠাইতে অনুরোধ করিয়াছেন।

 নবীনচন্দ্রের নির্ব্বন্ধাতিশয়ে শিবচন্দ্র পুত্ত্রকে তাহার শ্বশুরালয়ে পাঠাইতে আপত্তি করিলেন না। প্রভাত শ্বশুরালয়ে গেল।

 প্রায় সপ্তাহ কাল পরে শিবচন্দ্র দুইখানি পত্র পাইলেন;— একখানি কৃষ্ণনাথের, অপরখানি প্রভাতের। কৃষ্ণনাথের কনিষ্ঠ পুত্ত্র নলিনবিহারী কিছু দিন হইতে শিরঃপীড়ায় কষ্ট পাইতেছিল। গ্রীষ্মকালে তাহার পীড়া বাড়িয়া উঠায় চিকিৎসকের উপদেশে কৃষ্ণনাথ সপরিবারে দার্জ্জিলিং যাত্রা করিলেন। তিনি প্রভাতকে সঙ্গে লইয়া যাইতে চাহিলেন। প্রভাত পিতার সম্মতি না পাইলে যাইতে চাহিল না । কৃষ্ণনাথ তাহার আপত্তি শুনিলেন না; বলিলেন, “আমি বৈবাহিক মহাশয়ের মত করিতেছি।” যাইবার

৭৯