পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

 “ভাল আছে?”

 “হাঁ।”

 এ দিকে পিতার পত্র যথাকালে প্রভাতের হস্তগত হইল। পিতার নিকট এমন কঠোর তিরস্কার সে কখনও ভোগ করে নাই। তাহার চক্ষুর সম্মুখে দিবসের আলোক যেন হরিদ্রাবর্ণ হইয়া গেল । সে পত্রখানি লইয়া একাকী ভ্রমণে বাহির হইল; বহু দূর যাইয়া একটু নির্জ্জন স্থানে একখানি শিলার উপর বসিল; পত্রখানি পুনরায় পাঠ করিল। তাহার চক্ষু ফাটিয়া জল পড়িল।

 প্রভাত বসিয়া ভাবিতে লাগিল। হৃদয়ে দারুণ বেদনার পার্শ্বে দুঃখ ফুটিয়া উঠিল;—পিতা একবার বিবেচনা করিয়া দেখিলেন না যে, সে ইচ্ছা করিয়া তাঁহার অবাধ্য হবার কল্পনাও করিতে পারে না? সে ত তাঁহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কার্য্য করিতে পারে না। সে কি কখনও তাঁহার আদেশ অমান্য করিতে পারে?

 তখন দিবাবসান হইতেছে। দূরে তুষারসমাচ্ছন্ন কর্পূরধবল শৃঙ্গশ্রেণীর পশ্চাতে দিনান্ততপন অদৃশ্য হইয়া যাইতেছে; ,কিন্তু পশ্চিমদিগন্তে সূর্য্যাস্তশোভা প্রকটিত হইতে না হইতে, আকাশে দুই চারিটি রেখায় বর্ণদীপ্তি বিকশিত হইতে না হইতে, কুজ্ঝটিকা উঠিয়া চারি দিক অন্ধকার করিয়া দিল; ঘন কুজ্ঝটিকাপুষ্ট বারিবিন্দু আপনার ভার বহিতে অসমর্থ হইয়া ভূপতিত হইতে লাগিল। প্রভাতের হৃদয়েও অন্ধকার ঘনাইয়া আসিল।

৮১