পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

“প্রাণাধিকেষু,

 তোমার পত্রে তোমাদের কুশলসংবাদ অবগত হইয়া নিঃশঙ্ক হইলাম। আমরা রাগ করিয়াছি ভাবিয়া পত্র লিখ নাই । অমন করিতে আছে? তুমি কি বুঝিতে পার নাই, দাদার কথা রাগের নহে—অভিমানের? আমাদের রাগ বল, অভিমান বল, তুমি ভিন্ন আর কে সহ্য করিবে? তুমি দাদাকে পত্র লিখ নাই; পত্রপাঠ লিখিও। বাবা, এ সবই তোমার; আমরা আর কয় দিন?

 কমল কিছু দিন তোমার পত্র পায় নাই। সতীশ আজ সংবাদ জানিতে পাঠাইয়াছিলেন। তাঁহাদিগকে সংবাদ দিও। আমার আশীর্ব্বাদ তুমি জানিও; মা’কে জানাইও। মা কি এ বুড়া ছেলেকে একেবারেই ভুলিয়া বসিয়া আছেন? ইতি

নিত্যাশীর্ব্বাদক 
শ্রীনবীনচন্দ্র দত্ত।” 

এই পত্র পাইয়াও প্রভাতের নয়নে অশ্রু দেখা দিল। কিন্তু এ অশ্রু বেদনার নহে,— আনন্দের। সে আনন্দ পিতৃব্যের হৃদয়ে আপনার স্নেহাসন অবিচলিত জানিয়া।

 প্রভাত পত্রখানি জামার পকেটে রাখিল। রাত্রিকালে জামা থুলিয়া শয়ন করিল। প্রভাতে উঠিয়া সে জামা পরিয়া বাহিরে আসিল; পকেটে হাত দিয়া দেখিল, পত্র নাই। নিশ্চয়ই জামা পরিবার সময় পড়িয়া গিয়াছে। প্রভাত শয়নকক্ষে ফিরিয়া আসিল; দেখিল, শোভা তাহার পত্র পড়িতেছে ।

৮৭