পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

আসাতে তাহার পিতা রাগ করিয়াছেন; এবং তাহাই জানিয়া সে ব্যস্ত হইয়া গৃহে ফিরিল। পত্নী—বিশেষতঃ নবপরিণীতা, অল্পবয়স্কা পত্নী আবার কবে মনে করিয়া থাকে যে, সে ব্যতীত অপরের সম্বন্ধেও তাহার স্বামীর কর্তব্য আছে; স্বামীর উপর সে ব্যতীত আর কাহারও অধিকার আছে?

 প্রভাত গৃহে গেল। যাইবার সময় পত্নীর আঁধার মুখ দেখিয়া গেল। তাই ভাবিতে ভাবিতে গেল। বিচ্ছেদ কি কখনও সুখের হয়? এক দিকে পিতার বিরক্তি, অপর দিকে পত্নীর আঁধার মুখ—উভয় চিন্তাই কষ্টের।

 প্রভাত গৃহে আসিল। নবীনচন্দ্র তেমনই আগ্রহে তাহার আগমন প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। গৃহে তাহার আদর যত্নের বিন্দুমাত্র ত্রুটী ছিল না। সতীশচন্দ্র তাহার আগমনসংবাদ পাইয়া একদিন স্বয়ং আসিয়া তাহাকে লইয়া গেল।হাস্যপরিহাসে, বিদ্রূপে, রহস্যালাপে সে দিন কাটিয়া গেল।

 কিন্তু প্রভাতের সন্দেহ ঘুচিল না। তাহার মনে হইল, যেন পিতার ব্যবহার বিরক্তিমুক্ত নহে। যখন সন্দেহের কোনও কারণ না থাকে, তখন যে ব্যবহার দৃষ্টিপথে পতিত হয় না, সন্দেহ-শঙ্কিত হৃদয়ে তাহা সহজেই অনুভূত হয়। বরং সন্দেহকলুষিত হৃদয়-দর্পণে অনেক সময় অবিকৃত দ্রব্যের প্রতিবিম্বও বিকৃত দেখায়।

 প্রভাত বুঝিল না, তাহার উপর বিরক্তি তাহার স্নেহশীল পিতার পক্ষে বিষম বেদনার কারণ। শিবচন্দ্র বুঝিলেন না,

৯০