পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হৰ্ষ-চরিত è o Sd সুতরাং সেকালে জয়-পরাজয়ের ফলে রাজা বদলালেও রাজ্য বদলােত না । অপরপক্ষে শক, যবন, হ্রন প্রভৃতির আক্রমণে সমগ্ৰ সমাজ যুগপৎ বিপৰ্য্যস্ত ও নিপীড়িত হ’ত। কারণ, এই বিদেশী শত্রুরা দেবদ্বিজ, রাজা-প্ৰজা কারও মৰ্য্যাদা রক্ষা করতেন না, সকলেরই উপর সমান অত্যাচার করতেন। সুতরাং হন। প্রভৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুধু রাজার যুদ্ধ নয়, রাজা-প্ৰজা উভয়ের মিলিত আত্মরক্ষার প্রয়াস । এ অবস্থায় যখনই হিন্দুরা আত্মরক্ষা করতে সমর্থ হয়েছে, তখনই তাদের আনন্দ আর্টে, সাহিত্যে ফুটে উঠেছে। হিন্দু-প্ৰতিভা পরবশ হলেই নিদ্রিত হয়ে পড়ে, আত্মবিশ হলেই আবার জাগ্ৰত হয় । অশোকের যুগ ভারতবর্ষের স্থাপত্য-শিল্পের যুগ। গুপ্তযুগ কালিদাসের কাব্যের ও অজন্তাগুহার চিত্রশিল্পের যুগ । আর হর্ষের যুগ কাদম্বরী ও ভাতৃ হরি-শতকের যুগ । প্ৰাচীন ভারতের এই চক্রবত্তী মহারাজরা সত্যসত্যই মহাপুরুষ ছিলেন । কারণ, তারা একমাত্ৰ যোদ্ধা ছিলেন না, দেশের সকল প্ৰকার গুণীর তারা গুণগ্ৰাহী ভক্ত ছিলেন, এবং তঁদের সাহায্যেই দেশের কাব্য, আর্ট প্রভৃতি প্ৰস্ফুটিত হয়ে উঠেছিল। শুধু তাই নয়, সমুদ্রগুপ্ত ও হৰ্ষবৰ্দ্ধন নিজেরাও আটিষ্ট ছিলেন। হর্ষ দেশের ধৰ্ম্ম ও সাহিত্যকে যে কতদূর বাড়িয়ে তুলেছিলেন, তার পরিচয় রাধাকুমুদ বাবুর পুস্তকে সকলেই পাবেন ।