পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

। २२२ নানা চৰ্চা জুৰে এ মনোভাব যে আমাদের দৈনিক সংবাদপত্রে ও বক্তৃতার রঙ্গমঞ্চে গর্জে ওঠেনি, তার কারণ নিজের বিরুদ্ধে হুজুগ করা চলে না। যে ভাব মনে পোষণ করবার জন্য, যে কাজ করবার জন্য আমরা মনে মনে লজ্জিত হই, তা নিয়ে প্রকাশ্য ঢাক পেটানো অসম্ভব ; আমরা ঢাক পেটাতে পারি শুধু আমাদের কাল্পনিক আধ্যাত্মিক শ্ৰেষ্ঠতা নিয়ে। কতকটা শিক্ষার বলে, কতকটা পরীক্ষার ফলে, আমরা আমাদের প্রকৃতি ও শক্তি দুয়েরই কিঞ্চিৎ জ্ঞানলাভ করেছি । নিজের ত্রুটির জ্ঞানও আত্মজ্ঞানেরই একাংশ ; এবং আত্মজ্ঞান আমাদের মনে জন্মেছে বলে, তারই উপর আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ জাতীয় জীবন গড়ে তুলতে চাই। আমাদের অন্তরের বল আমরা পরিপুষ্ট করতে চাই, তাই আমরা শিক্ষার জাতিবিচার করে তাকে আচরণীয় কিম্বা অনাচরণীয়ের কোঠায় ফেলতে চাই নে ; আর আমাদের দুর্বলতা আমরা পরিহার করতে চাই বলে, আমরা লোকের জাতি বিচাৱা করে তাকে আচরণীয় কিম্বা অনাচরণীয় করে রাখা, পেটুয়ািটক কাজ বলে মনে করিনে। কোন জাতির পক্ষে তার চিরাগত ংস্কার থেকে মুক্তিলাভ করে নবজীবন ও নবশক্তি লাভ করা সহজসাধ্য নয় ; এবং সে বিষয়ে সিদ্ধিলাভ করবার সাধন-পদ্ধতির নাম রাজনৈতিক হুজুগ নয়, কেননা ক্ষণিক উত্তেজনার পিিঠ পিিঠ আসে স্থায়ী অবসাদ। জাতীয় ঐশ্বৰ্য্য অবশ্য জাতীয় কৃতিত্বের উপর গড়ে ওঠে, এবং কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়, সাহিত্যে ও সমাজে, দর্শনে ও ধনে, বিজ্ঞানে ও আটে। মানুষের পক্ষে কিছু ত্যাগ করা, যথা উপাধি কিম্বা ওকালতি, শুনতে মহা কঠিন ; কিন্তু তার চাইতে ঢের বেশি কঠিন, কিছু করা, অর্থাৎ কৃতী হওয়া । জীবনের কাছ থেকে পালানো সহজ, তার সঙ্গে লড়ে জয়ী