পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8R নানা চৰ্চা নীলের চাষও করে। সোনা দিয়ে তারা গহনা গড়ায় ও জরি বানায় । “গহনা গড়তে ও জরির কাজ করতে তারা অদ্বিতীয় ওস্তাদ । বালীর ভাষা জাভার ভাষারই অনুরূপ। তবে ইতালীর ভাষার সঙ্গে ফরাসী ভাষার যে প্ৰভেদ, যদ্বীয় ভাষার সঙ্গে বলীয় ভাষার সেই “প্ৰভেদ। এদেশের সাহিত্যের ভাষার নাম “কবি”,-“সাধু” নয়। পাঁচশ' বৎসর পূর্বে জাভার সাহিত্য “কবি” ভাষাতেই লেখা হত। এ ভাষার অনেক শব্দ সংস্কৃত । এ যুগে জাভার লোক, তাদের সাহিত্যের ভাষা বড় একটা বুঝতে পারে না-কিন্তু বালীর লোকের কাছে “কবি” মৃত নয়। চারশ’ বৎসর আগে জাভার লোক সব মুসলমান হয়ে যায়। সম্ভবত সেইজন্য তারা তাদের পূর্ব কবি-ভাষা ভুলে গিয়েছে ; আর বালীর লোক আজও হিন্দু রয়েছে বলে “কবির” পঠনপাঠন সে দেশে আজও bव्Cछ । জাভার যথার্থ নাম যে যবিদ্বীপ, তা তোমরা সবাই জানো । সংস্কৃত যব শব্দের অন্তস্থ ‘য’ আরব দেশের মুসলমানদের মুখে বৰ্গীয় জয়ে, ও ব’ ভয়ে পরিণত হয়ে, তদুপরি আকার আকার হয়ে জাভা রূপ ধারণ করেছে। এই সংস্কৃত নাম থেকেই আন্দাজ করা যায় যে, পুরাকালে ও-দ্বিীপের নামকরণ করেছিল হিন্দুরা। এখন তোমরা জিজ্ঞাসা করতে পারো, কবে হিন্দুরা এ দ্বীপ আবিষ্কার করে ?-এর উত্তর দেওয়া অসম্ভব। তবে যে কালে এদেশে রামায়ণ লেখা হয়, সে কালে যবন্দ্বীপ যে হিন্দুদের কাছে উক্ত নামেই পরিচিত ছিল, তার প্রমাণ রামায়ণেই আছে । আর সে বড় কম দিনের কথা নয় । তোমরা সবাই জানো যে, রামায়ণ রাম জন্মাবার ষাট হাজার বৎসর আগে লেখা হয়েছিল ; আর রাম জন্মেছিলেন ত্ৰেতা যুগে।